পুঠিয়া (রাজশাহী) সংবাদদাতা:
নাটোরের চাঁদপুর এলাকায় রাজশাহীর পুঠিয়া থেকে কাজ করতে যাওয়া এক নারী শ্রমিক ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছাঁয়া নেমে এসেছে।
সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৬ ছয়টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, নিহত সাথী খাতুন (৩০) পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়া এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। এ সময় ওই ঘটনায় আরও ৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতরা সকলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আজ সোমবার সকাল ৮টার দিকে নাটোর সদর উপজেলার রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের চাঁদপুর পাবনাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন,রাজশাহীর পবা হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মোফাক্কারুল ইসলাম। তিনি জানান, সাথী খাতুন পুঠিয়া থানার ঝলমলিয়া এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী ও নাটোর কিষোয়ান কোম্পানির নারী শ্রমিক ছিলেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় নিহত সাথী খাতুন নাটোরের কিষোয়ান কোম্পানিতে কাজে যান। কাজ শেষে সোমবার সকালে বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলে জানতে পারেন কোম্পানির গাড়িটি গতকাল ১৯ নভেম্বর রাতে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয় পরে কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয় অন্য কোনভাবে বাসায় ফিরতে। এসময় একটি ভ্যান গাড়িযোগে মোট ছয় জন নারী শ্রমিক পুঠিয়া এলাকায় আসার উদ্দেশ্যে নাটোরের চাঁদপুর এলাকায় আসা মাত্র রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাক সামনে থেকে সজোরে ধাক্কা দিলে মারা যায় সাথী খাতুন। অন্য পাঁচজনকে স্থানীয়দের সহায়তায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষ করে রাজশাহীতে প্রেরণ করা হয়। এদের মধ্যে আরো দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। বর্তমানে তারা সকলেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। নিহত সাথী খাতুন চিকেন নুডুলস সেকশনে কাজ করতেন বলে জানা যায়। এবং মৃত্যুর পর নাবালক তিন সন্তান রেখে যান।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দুর্ঘটনা কবলিত এক নারীর শ্রমিক আনোয়ারা বেগম তিনি বলেন, কোম্পানির গাড়িটি পুড়ে যাওয়ার ফলে আমাদেরকে সকালে বলা হলো তোমরা ভ্যানে করে বাসায় যাও। আজকের মধ্যে তোমাদের জন্য অন্য আরেকটি গাড়ি ঠিক করা হবে। সে অনুযায়ী চাঁদপুর গোরস্থানের কাছে আসতেই সামনে থেকে একটি ট্রাক আমাদের ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। সে সময় আমি ছাড়া সবাই অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। তবে গতকাল গাড়িটি দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে না দিলে হয়তো আজকে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটত না। আমরা ভ্যানে না এসে গাড়িতে আসলেই হয়তো নিরাপদ থাকতাম।
এদিকে নিহত সাথী খাতুনের আত্মীয় স্বজনরা বলছেন, পরিবারটি বড় অসহায় হয়ে পড়েছে। তিনজন ছোট ছোট ছেলেমেয়ের রেখে মা মারা যাওয়া য় এখন পরিবারটি বড় রকমের অসহায় হয়ে পড়েছে। সাথীর স্বামী অসুস্থ, সাথী একা কাজ করে সংসার চালায়। এখন কে দেখবে তাদেরকে।
এ বিষয়ে নিহত সাথী খাতুনের স্বামী বাদশা মিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত কোম্পানির কেউ আমাদের সাথে ওভাবে যোগাযোগ করেনি।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ট্রাকটি জব্দ করেছে।এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পবা হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা ওসি মোফাক্কারুল ইসলাম।
এদিকে এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কিষোয়ান কোম্পানির এ্যাডমিন ম্যানেজার কফিল উদ্দিন তিনি বলেন, আসলে আমাদের কোম্পানিতে যারা কাজ করে, তারা কর্মী নয়, তারা আমাদের পরিবারের একজন। সাথী খাতুন এর বিষয়ে আমরা জানি আর তার জন্য যতটুকু করা সম্ভব কোম্পানির পক্ষ থেকে করা হবে। আমরা প্রতিনিয়ত তার পরিবারের খোঁজখবর রাখছি।