মোস্তাফিজুর রহমান জীবন রাজশাহীঃ
চাঞ্চল্যকর লিবিয়ায় বন্দী ২৭ বাংলাদেশী যুবকের কাছে মুক্তিপন আদায় কারী চক্রের মূলহোতা জাহিদ হোসেন (২৭) কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৫ এর চৌকস আভিযানিক দল।
২৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার সময় নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার সিংগারা পাড়া এলাকায় নিজ বসতবাড়ী থেকে তাকে আটক করা হয়।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম সদর থানাধীন ভোগরা এলাকার মৃত ইনজল হোসেনের ছেলে মোঃ ইয়াকুব আলী (৩৮) এর সাথে বিগত ০২ (দুই) বছর পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধান আসামী জাহিদ হোসেন (২৭) এর সাথে পরিচয় হয়।
পরিচয় সূত্রে আলাপ চারিতায় সে বাদীকে জানায় যে, সে ইতালী প্রবাসী।ইতালীতে তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।বাংলাদেশের অনেক লোক তার মাধ্যমে ইতালিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।ইতালীর শ্রম বাজার, উচ্চ বেতন, শ্রমিকদের বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা ইত্যাদি আকর্ষনীয় বিষয়ে বাদীকে পলোভন দিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রলুব্ধ করে।
প্রধান আসামি জাহিদ হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনের ভিডিও কলে ভার্চুয়ালী আলোচনার মাধ্যমে ইতালী যাওয়ার খরচ বাবদ ২০,০০,০০০/- টাকার প্যাকেজে ধার্য্য করে। তার মধ্যে ৫,০০,০০০/- টাকা অগ্রীম এবং অবশিষ্ট ১৫,০০,০০০/- টাকা ইতালী পৌছে কাজে যোগদান করার প্রথম সপ্তাহেই বাংলাদেশে অবস্থানরত ২নং আসামীর কাছে জমা দেয়ার আলাপ চুড়ান্ত হয়।
তারপর দুবাইগামী এমিরাত এয়ার লাইন্সের একটি ফ্লাইটে গত ২৪/০৯/২০২৩ সালে বাদীসহ ২৭ জন ভুক্তভোগী দুবাই পৌছাই।দুবাই হতে ফ্লাইটে নাইজার নিয়ে সড়ক পথে আলজেরিয়া যাওয়ার পর আলজেরিয়া পুলিশ তাদের সকলকেই ধরে নিয়ে গেলে তাহারা ২১ দিন জেল খাটে।জেল হতে মুক্তি পাওয়ায় পর ৬নং আসামী মোঃ আব্দুল মান্নানসহ ১নং আসামী জাহিদ তাদের সকলকেই নিয়ন্ত্রন নেয়।১-৬নং আসামী তাদেরকে আলজেরিয়া হতে সড়ক পথে তিউনিশিয়া নেয়।তিউনিশিয়া হতে লিবিয়া নিয়ে তাদের সকলকেই একটি বাড়িতে জিম্মি করে ১নং আসামী মূলহোতা জাহিদের নের্তেৃত্বে ৬-১০ নং আসামীগন বাদী ও অন্যান্য জিম্মিদের অমানষিকভাবে নির্যাতন করে ও পড়নের কাপড় খুলে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে এবং ভিডিও ধারণ করে দেশে তাদের পরিবারের সদস্যদের নিকট পাঠায়।সেই সাথে খুন করার হুমকীদিয়ে আসামীরা বাদীর বড় ভাই ও স্ত্রী এর নিকট ৫০,০০,০০০/- টাকা মুক্তিপন দাবী করে।
বাদীকে ইতালী পাঠানোর প্রলোভন দিয়ে সরল বিশ্বাষ জন্মাইয়া প্রতারণার মাধ্যমে ও কৌশলে অপহরণ করতঃ খুন করার হুমকী ও ভীতির মাধ্যমে বাদীর পরিবারের নিকট হতে মোট (৫ লাখ +৩০ লাখ+৫লাখ)=৪০ (চল্লিশ লক্ষ) টাকা প্রতারণা ও মক্তিপণ বাবদ আদায় করে।
বাদী অন্যান্য ভুক্তভোগীদের নিয়ে আসমীগনের বিরুদ্ধে মুক্তিপণ দাবী করার সংবাদ বাংলাদেশের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টিং মিডিয়ায় প্রকাশ ও প্রচার হওয়ায় লিবিয়ায় অবস্থিত দুতাবাসে কর্মরত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোঃ খাইরুল বাশার তাদের উদ্ধার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।বাদী ০৯ জানুয়ারী ২০২৫ তারিখ নিজ বাড়িতে ফেরৎ এসে সর্বস্ব হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরে মামলা করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী উক্ত ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে কুড়িগ্রাম সদর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
লিবিয়ায় জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, মূল হোতা গ্রেফতার