• রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী নগর বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতির সঙ্গে আল মামুনের সৌজন্য সাক্ষাৎ পুঠিয়ায় প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ নোমান-আরাফাতের নতুন নেতৃত্বে বাগমারা উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদ তাহেরপুরে ওয়ান ডে ক্রিকেট টুনার্মেন্ট অনুষ্ঠিত রাজশাহী রেলওয়ে হাসপাতাল সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা রানা প্লাজা ধসে পুঠিয়ার আহত ময়নার ১২ বছর ধরে অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ রিক্সা-চালক আবুল আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ প্রতারণা করে ভাগ্য বদল হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি বিএনপি নেত্রী মাহমুদা হাবীবার পুঠিয়ায় মুসা খাঁ নদী থেকে নারীর লাশ উদ্ধার পুঠিয়ায় রাস্তা থেকে জোর পূর্বক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ

মামলার ফাঁদে গ্রামীণ নারীরা, ঋণ নিতে ফাকা চেক-স্ট্যাম্প জেল খাটছে অনেকে

বিডি নিউজ২৩, রাজশাহী
সংবাদ প্রকাশ: শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
মামলার ফাঁদে গ্রামীণ নারীরা, ঋণ নিতে ফাকা চেক-স্ট্যাম্প জেল খাটছে অনেকে
মামলার ফাঁদে গ্রামীণ নারীরা, ঋণ নিতে ফাকা চেক-স্ট্যাম্প জেল খাটছে অনেকে

বিডি নিউজ২৩, রাজশাহী: ঋণ আদায়ে আইনের বাড়ছে যথেচ্ছ ব্যবহার। উচ্চ আদালতের আদেশ মানছেনা এনজিও। ব্যাংক চেক সম্পর্কে অজ্ঞতায় ফেঁসে যাচ্ছেন নারীরা। ঋণের বিপরিতে চেক জমা নেয়া অবধৈ মত আইনজ্ঞদের। আগের জরিপে চেকের মামলায় ৪৭২ কয়েদির মধ্যে ১৪ জনই নারী।

 

রাজশাহীর পুঠিয়ায় ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি) নামের এনজিওর নিকট গ্রাহকরা ঋণের টাকা নিয়ে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। কিস্তি দিতে বিলম্ব হলে দেয়া হচ্ছে মামলা খাচ্ছেন জেল কোর্টের বারান্দায় অনেকে করেছেন এভাবে ঋণ পরিশোধ। এতে করে ওই এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

 

সঠিক সময়ে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় একাধিক গ্রাহকের বিরুদ্ধে ব্যাংকের চেক বইয়ের পাতা দিয়ে কোর্টে মামলা করার অভিযোগ উঠেছে এবং অনেকে জেল পর্যন্ত খেটেছেন। গ্রামঞ্চলের সাধারণ মানুষ অভাব-অনটনের তাড়নায় এনজিওর নিকট হতে ঋণের কিস্তি হিসাবে সাধারণত টাকা নিয়ে থাকেন। আর এই সুযোগে এনজিওর কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের নিকটে প্রথমে ব্যাংকের ফাঁকা চেকের পাতা এবং তিনশত টাকা মূল্যের ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে রাখেন। পুঠিয়া সদরের ব্যবসায়ী মারুফ ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি) এনজিওর নিকট ফাঁকা চেকের পাতা দিয়ে সে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। টাকা পরিশোধের পর সে চেকের পাতা ফেরত চাইলে এনজিওর ক্যাশিয়ার তার নিকট ১০ লাখ টাকা পাবে বলে মামলা করার হুমকিও দেয়। মারুফের মতো একাধিক ডিএফইডির গ্রাহকর অভিযোগ, এনজিওটি কিস্তির টাকা পরিশোধ করার পরও তাদের ব্যাংকের চেক বইয়ের পাতা দিতে কর্তৃপক্ষ গরিমসি ও তালবাহনা করে। এরপর কিস্তির টাকা দিতে বিলম্ব হলে তাদের নামে কোর্টে মামলা করার হয়। ওই এনজিও একাধিক মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। আ.লীগ শাসন আমলে এনজিওর গ্রাহকদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করার নজির রয়েছে। পৌর সদরের বাহার উদ্দিন ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল। ৩০ হাজার টাকার কিস্তি না দিতে পারায় তার বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়। সে অসুস্থ থাকায় কোর্ট তাকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছিল। পৌর এলাকার নিমতলার ব্যবসায়ী সেলিম হোসেন ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সঠিক সময়ে কিস্তি না দিতে পারায়, তার নামে মামলা হয়েছে। সে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। সদর ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের সৌদী প্রবাসী মামুনের স্ত্রী রুপালি বেগম ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল। রুপালির মা ক্যাসারে আক্রান্ত হওয়ায় দুটি কিস্তি না দেওয়ায় তার নামেও মামলা হয়েছে, খেটেছেন জেল। উপজেলার পালোপাড়া তাহেরের মোড়ের রফিকুল ইসলাম ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। অভাবনটন ও অসুস্থ হওয়া কিস্তি দিতে না পারায়, একটি ভুয়া মামলার কাগজ দিয়ে ভয় দেখায় তার ভাই ঋণের জামিনদার আ: লতিফকে।

 

 

দক্ষিণ পালোপাড়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের স্ত্রী জলি বেগম ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছিল। স্বামী তালাক দেওয়ায় সে কিস্তি দিতে না পারায় তার বিরুদ্ধেও দেওয়া হয় মামলা। আগামী সোমবার কোর্টে মামলার হাজিরা দেওয়ার তারিখ হয়েছে। তাহেরের মোড় পশ্চিমপাডার গোলবারের স্ত্রী স্থানীয় জুট মিলে কাজ করে। অপারেশন করা হয়েছে সে একজন রোগী। ওষুধ না খেয়েও এনজিওর হুমকিতে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। রুপালি বেগম বলেন, ঔষধ খাওয়ার জন্য টাকা রেখেছিলাম পরে এনজিওর পীড়াপীড়িতে দুই হাজার টাকা বাসায় ছিল সেটা দিয়ে দিয়েছি। আমার অপারেশন পরবর্তী সময়ে ঔষধ কিনতে হবে সেই টাকাও এখন আমার কাছে নাই।পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে কিস্তির টাকা দিতে পরিনি।

 

অনেকে বলছেন যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের দাবি তাদের নিকটে এনজিও এত টাকা পাবে না। কিন্তু অনেক বেশি টাকা দাবি করে কোর্টে তারা মামলা করেছে। আমরা এনজিওর নিকট যারা কিস্তির হিসাবে ঋণ নিই তারা কেউ ধনী না। অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে টাকা ঋণ নিয়ে থাকি। ডিএফইডি ঋণ নেওয়ার পর অভাবের তাড়নায় কয়েকটি কিস্তি সঠিক সময়ে না দিতে পারায় ঢালাও ভাবে চেকের মামলা দিয়ে আমাদের এনজিওটি জিম্মি করে রেখেছেন। তারপর সময় মতো কিস্তির টাকা দিতে না পারলে এনজিওর মাঠকর্মী এবং ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম নিজে গিয়ে গ্রাহকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, আব্দুল লতিফ ও বাহার বলেন, ম্যানেজার আসরাফুল ইসলাম সন্ত্রাসী বাহিনীর ক্যাডারের মত কথা বলেন। সে এমপি, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আ.লীগের পক্ষে নির্বাচনীয় মাঠে থেকে সরাসরি ভোট দেওয়ার জন্য গ্রাহকদের বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করেছিল। এই এনজিওর কর্মী এবং ম্যানেজারের আচার-ব্যবহারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

 

এ ব্যাপারে ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি) ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম এনজিওর সকল বিষয় অস্বীকার করে বলেন, দির্ঘদিন যাবত যারা কিস্তির টাকা পরিশোধ করেনি। শুধু তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

 

মোঃ ফসিউল্লাহ্, এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি নোট করে রাখলাম তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মামলার ফাঁদে গ্রামীণ নারীরা, ঋণ নিতে ফাকা চেক-স্ট্যাম্প জেল খাটছে অনেকে

মামলার ফাঁদে গ্রামীণ নারীরা, ঋণ নিতে ফাকা চেক-স্ট্যাম্প জেল খাটছে অনেকে

সংবাদটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

Recent Comments

No comments to show.