বিডি নিউজ২৩; সব ওসিকে বদলির নির্দেশ ইসির। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান নির্দেশনাটি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের বেশি চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে তাদের অন্য জেলায় বা অন্যত্র বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো প্রয়োজন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) পর্যায়ক্রমে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সাংবিধানিক এই সংস্থা ইউএনওদের বদলির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর পাঠানো ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব ইউএনওকে পর্যায়ক্রমে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব ইউএনওর বর্তমান কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ এক বছরের বেশি হয়ে গেছে, তাঁদের অন্য জেলায় বদলির প্রস্তাব ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ইসিতে পাঠানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়। এর আগে দেশের সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলির নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
এত দিন ধরে ইসি বলে আসছিল, পুলিশ ও প্রশাসনের মাঠপর্যায়ে বড় রদবদল আনা হবে না। গত ২২ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মাঠ প্রশাসনে রদবদল করতে গিয়ে বিশৃঙ্খলা হলে তার দায় কে নেবে? প্রশাসনে রদবদল করা হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে গত রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল পাল্টা প্রশ্ন রেখেছিলেন, প্রশাসনে রদবদল কে কখন করেছিল? তিনি বলেন, তাঁরা নির্বাচনের স্বার্থে যেটা ভালো মনে করবেন, সেটা করবেন। তবে এখতিয়ারের বাইরে যাবেন না। এখতিয়ারের মধ্যে যা আছে, তা করবেন।
সিইসির এই বক্তব্যের চার দিনের মাথায় পুলিশের মাঠপর্যায়ে বড় রদবদল আনার সিদ্ধান্ত নিল ইসি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। ওই দিন বিকেলে জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গেও বৈঠক হয়। এরপর পুলিশ ও প্রশাসনের মাঠপর্যায়ে রদবদলের চিঠি দেওয়া হয়।
ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুলিশের পাশাপাশি জনপ্রশাসনের মাঠপর্যায়েও রদবদল করার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। আজকালের মধ্যে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।
এ সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩২২ সদস্য ভোটের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
এবারের নির্বাচনের ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। এক্ষেত্রে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রয়োজন হবে, যাদের নিয়োগ দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর।
রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)। (সুত্র: প্রথম আলো)
দেশের সব থানার ওসি ও ইউএনও’দের বদলির নির্দেশ