মোঃ জুয়েল মিয়া, বিডি নিউজ২৩: দ্বিতীয় বিয়ের সম্মতি আদায়ে স্ত্রী’কে বেধড়ক মারপিট করেছে পাষণ স্বামী। পরে নিজেই স্ত্রী’কে হাসপাতালে ভর্তি করে সে। আহত স্ত্রীর জ্ঞান ফিরলে আবারও মারপিটের হুমকি দিয়ে হাসাপাতাল থেকে ছিনিয়ে নেয় ৩ বছরের শিশুকে।
শুক্রবার সকালে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ঘটনা ঘটে।
বোধবার (৬ জুন) জানা যায়, দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামের একরাম আলীর মেয়ে নাসিমা বেগমের বিয়ে হয় ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের উলুরগাঁও গ্রামের সমর আলীর ছেলে কামরুল হকের সঙ্গে। ২০১১ সালে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হওয়ার পর থেকে স্ত্রী’কে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে বখাটে স্বামী। তাদের তিন সন্তান রয়েছে।
সম্প্রতি কামরুল হক ছাতকের জাউয়াবাজার এলাকা থেকে এক মেয়েকে নিয়ে আসে এবং বেশ কিছুদিন ধরেই বিয়ের সম্মতিতে কাগজে দস্তখত দিতে চাপ সৃষ্টি করে। নাসিমা বেগম তা মেনে না নিয়ে দস্তখত না করলে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করতে থাকে। গত মঙ্গলবার রাতে দস্তখতের জন্য চাপ দিলে নাসিমা বেগম অস্বীকৃতি জানান। ওইদিন রাতে তার ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। একপর্যায়ে বেধড়ক মারপিটে অজ্ঞান হয়ে পড়লে স্বামী কামরুল স্ত্রী’কে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। দুইদিন পর (শুক্রবার) হাসপাতালে এসে জোরপূর্বক নাসিমার কাছ থেকে ৩ বছরের শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় সে বিয়ের সম্মতি না দিলে খবর আছে বলে হুমকিও দেয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন সন্তানের জননী নাসিমা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন থেকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে উঠে পড়ে লেগেছে। আমি সম্মতি না দেওয়ায় আমাকে নানাভাবে মারধর ও নির্যাতন করে। আমার পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে, আর সহ্য করতে পারছি না। এখন আমি তার কবল থেকে বাঁচতে চাই। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে এসে কোলের সন্তানকে নিয়ে গেছে। আমি সুস্থ হয়ে আইনী আশ্রয় চাইবো।
নাসিমা বেগমের মামা সুরমা ইউপি সদস্য মাসুদ মিয়া বলেন, আমার ভাগ্নি গুরুতর আহত হয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে। এর আগেও কামরুল এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেব দুলাল ধর বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ করা হলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।
দোয়ারাবাজারে দ্বিতীয় বিয়ের সম্মতি না দেওয়ায় স্ত্রী’কে মারধরের অভিযোগ