ঢাকার-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে এমন ঘটনায় গাওপাড়া ঢালান এলাকার মানুষেরা খুব আতঙ্কিত। এলাকাবাসীরাও বর্তমানে নিজেদেরকে অনিরাপদ মনে করছেন। বেড়েছে ছিনতাইকারীদের উপদ্রব পাশাপাশি অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা….
ইমাম হোসাইন, বিডি নিউজ২৩: রাজশাহীর পুঠিয়ায় কুদ্দুস আলী ওরফে কালু (৩৫) নামের এক চার্জার ভ্যানচালককে হাতপা বেধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার ভ্যানযাত্রী পুঠিয়া কআন্দ্র এলাকার সবজি বিক্রেতা আব্দুল আওয়াল (৫৫) নামের একজন ব্যক্তির সাথে থাকা টাকা-পয়সা কেড়ে দিয়ে প্রাণ ভিক্ষা পেয়েছেন। নিহত ভ্যানচালক কালু চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছি এলাকার আব্দুল ওহেদ আলীর ছেলে বলে জানা যায়।
রোববার (২১ মে) ভোর পৌঁনে পাঁচটার দিকে উপজেলা জিউপাড়া ইউনিয়নে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের গাঁওপাড়া ঢালান স্কুলের পাশে ওই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।
সকালে মহাসড়কে পাশদিয়ে লোকজন হাটাহাটি করার সময় মানুষের কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। পরে সেখানে গিয়ে একজনকে জবাই করা ও অপর একজনের হাতপা বাধা অবস্থা দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
প্রাণে বেঁচে যাওয়া সবজি বিক্রেতা আব্দুল আওয়াল বলেন, তিনি পুঠিয়া রাজবাড়ি বাজারে সবজির ব্যবসা করেন। প্রতিদিন ভোরে বিভিন্ন বাজার থেকে সবজি কিনে আনেন। প্রতিনিনের ন্যায় ভ্যানচালক কালুকে নিয়ে ভোরে নাটোর তেবাড়িয়া হাটে যাচ্ছিলেন। পথে গাঁওপাড়া বাজারের কাছে পৌঁছালে তিনজন অপরিচিত লোক তাদের ভ্যানের গতিরোধ করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাদের দুজনকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সড়কের পাশের একটি ফাঁকা জমিতে নিয়ে যায়। এরপর কালুর কাছে ভ্যানে চাবি চাইলে সে চাবি দুরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে কালুর চোখ হাত পা বেঁধে ফেলে। এরপর ছুরি দিয়ে তাকে জবাই করে। তারা আমার কাছে থাকা ৪ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেয়। এ সময় আমি কান্নাকাটি শুরু করলে তারা আমার প্রাণ ভিক্ষা দিয়ে হাতপা বেধে রেখে চলে যায়।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুঠিয়া সার্কেল) রাজিবুল হাসান, থানার ওসি ফারুক হোসেন, সিআইডি, পিবিআইসহ বিভিন্ন সংস্থার তদন্তকারি দল ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ঘটনাটি লোমহর্ষক। ঘটনাস্থলে ছুরি পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আলামত উদ্ধারে সিআইডিকে ডাকা হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। অপরদিকে অভিযুক্তদের সনাক্তে সবজি বিক্রেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে এ কর্মকর্তা জানান। এ রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
উল্লেখ্য যে, গত সপ্তাহেও ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে ঝলমলিয়া এলাকার রবিন হোসেন নামের একজন ব্যক্তি একটুর জন্য প্রাণে বেঁচে যায়। আর রক্ষা পায় তার মোটরসাইকেলটি। ছিনতাইকারীদের উপদ্রবের পাশাপাশি বেড়েছে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা। এছাড়াও সাধারন মানুষরাও মনে করছেন ছিনতাইকারীদের পুঠিয়াসহ আশপাশের উপজেলা গুলো যেন অভয়া আশ্রম হিসেবে গড়ে উঠছে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকলে ভবিষ্যতে আরও বেশি মূল্য দিতে হতে পারে পুঠিয়া সহ আশেপাশের উপজেলা গুলোর সাধারণ মানুষদের।
