বিডি নিউজ২৩: ভূমির নামজারিতে (খারিজ) প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়া ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নাছরীন সুলতানাকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে। একই সাথে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ৩টায় উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ওই কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও গতরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি আমরা অবহিত হই। এরপর সকালে ওই ভিডিও এর অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত করে প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
ফলে অভিযুক্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নাছরীন সুলতানাকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে। পাশপাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ওই কর্মকর্তার স্থলে অন্য কর্মকর্তাকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হবে বলেও জানান উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি)।
এর আগে সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতে ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নাছরীন সুলতানা এক ভূমি মালিকের কাছ থেকে নামজারি করার জন্য প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপরই ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন মহলে। ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তির সঙ্গে টাকার বিনিময়ে কাজ করে দেওয়ার জন্য দর-কষাকষি করছেন নাছরীন সুলতানা।
এক পর্যায়ে হাসিভরা মুখে টাকা হাতে নিতে নিতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি তো আমার চাকরি খাবেন, সামনা-সামনি যা করছেন। আমার চাকরিটা খাওয়ার জন্য আপনি লাগছেন। এই শোনেন, যেটা দেখাইছি ওইটা দিতে হবে, তাহলে আপনি কাজ পেয়ে যাবেন। ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা টাকা দিলে এটা অয়না। আমি এইটা রাখলাম। কিন্তু দেওয়া লাগব, ওইটা না দিলে আপনার খারিজ (নামজারি) হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ময়মনসিংহের ত্রিশালের কানিহারী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারি করতে গিয়েছলেন ঘুষ দেওয়া সেই ব্যক্তি। দুই দিন পরে বাকি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই ব্যক্তি দুটি নামজারির জন্য ১৭ হাজার টাকা দেবেন জানালে আবার ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘না এইতা অইতনা, এইতা বাংলা আলাপ কইরেন না। এ সময় ওই ভূমি কর্মকর্তা ক্যালকুলেটরে লিখে ওই ব্যক্তিকে টাকার পরিমাণ দেখিয়ে বলেন, ‘এটা লাগবে।’
তবে অভিযোগ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নাছরীন সুলতানার কোন বক্তব্য জানা যায়নি।
এই বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ এনামুল হক তিনি বলেন, কোথাও কোন এই ধরনের ঘটনা ঘটলে আমরা তাৎক্ষণিক তদন্ত করি, অনেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, কাউকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘুষ দুর্নীতির জিরো টলারেন্স তা আমরা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি। আমরা সারপ্রাইজ ভিজিট করি যে কোন ভূমি অফিসে হঠাৎ করে যাই। সেখানে কোন অনিয়ম পেলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করি এবং এই ধারা আমাদের অব্যাহত রয়েছে। এবং এই ধারা অব্যাহত থাকবে।