শাহাদত হোসাইন: নাটোর সদর উপজেলার পাইকপাড়ায় এক কৃষকের জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার পাইকপাড়ায়, বাদী মোঃ শাহাবুল (৪২), আইডি নং-৪১৮৪৯১৬১৩০, পিতা-মৃত এমদাদুল হক, সাং-পাইকপাড়া, পোষ্ট-জিউপাড়া, থানা-নাটোর, জেলা-নাটোর। বিবাদী ১। মোঃ হান্নান সরকার (৫৭), পিতা-মৃত সালাম সরকার, ২। মোঃ মুকুল সরকার (৪৭), পিতা-মৃত রাজা সরকার, উভয় সাং-পাইকপাড়া, পোষ্ট-জিউপাড়া, থানা নাটোর, জেলা-নাটোর সাথে অজ্ঞাত আরো ৮/৯ জন। বিবাদীগন অবৈধ ভাবে জোর-পূর্বক জবর-দখলে রাখিয়া ভোগ করছে। বিবাদীগনকে উক্ত জমি সম্পর্কিত কোন কথা বললে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ, বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি, অন্যায়-অত্যাচার করত। উক্ত সম্পূর্ণ জমি নিজেদের বলে মিথ্যা দাবী করে। যাহার কোন ভিত্তি নাইও তাহাদের দাবীর প্রক্ষিতে কোন সঠিক বৈধ দলিল বা কাগজ পত্র দেখাইতে পারে না।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে স্থানীয় ইউনিয়ন কাউন্সিল চেয়াম্যান ও গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের মাধ্যমে একাধিক বার শালিশ-দরবারে বসে সুষ্ট মাফযোগের মাধ্যমে বাদির পৈত্রিক সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বারংবার বললেও বিবাদীগন তা করে না। বাদির স্বত্ব পৈত্রিক সম্পত্তি জবর-দখলে রেখে, উল্টো বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে থাকে। এরই জের ধরে গত ইং ২৬/০৯/২০২২ তারিখ সকাল অনুমানিক ৯ টার দিকে ১নং-বিবাদীর হুকুমে বিবাদীগন অনধিকার হক স্বত্ব পৈত্রিক জমিতে প্রবেশ করে মাটি কাটতে থাকে। বিবাদীগনকে বাগানে মাটি কাটতে বাধা-নিষেধ করলে, বিবাদীগন বাদিকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ, বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও মারপিটের হুমকি প্রদান করে। উপরোক্ত ঘটানার আলোকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নাটোর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জমির তফসিল: মৌজা-পাইকপাড়া, দাগ নং-১৩৫০, ১৩৫২, ১৩৮৪, ১৩৮৬, জে.এল নং-৮৬, খতিয়ান নং-১৯৩/১, রকম-বাগান, জঙ্গল ও ভিটা, মোট জমির পরিমাণ ৫৭ শতাংশ।
বাদী মোঃ সাহাবুল শাহ্ তিনি বলেন, আমার দাদার ৫৭ শতাংশ জমি জবর দখল করে ভোগ দখল করছেন মোঃ হান্নান সরকার, পিতা মৃত সালাম সরকার ও মোঃ মুকুল সরকার পিতা মৃত রাজা সরকার। অথচ এই জমির সকল খাজনা-খারিজ রেকর্ড আমার দাদার নামে। সে অনুযায়ী আমার পিতা ও চাচারা এই জমির মালিক। আর সে অনুযায়ী আমরা এ জমির হকদার কিন্তু কিছুতেই বিবাদীগণ আমাদেরকে জমিতে উঠতে দেয় না। অবৈধভাবে ভোগ দখল করছে আমি এর সঠিক বিচার চাই।
মোঃ রঞ্জু শাহ্ তিনি বলেন, সরকার বংশের যারা এ জমি ভোগ দখল করছে তারা কেউ এই জমির মালিক নয়। এই জমির প্রকৃত মালিক বা হকদার আমরা কারণ বর্তমানে আমরা এ জমির খাজনা পরিশোধ করছি। জমির সকল কাগজ পাতি আমাদের কাছে আছে। আর এস খতিয়ান এবং এসে খতিয়ান সব ই আমার দাদার নামে আছে। ওদের নামে কোন কাগজ নেই অথচ জোর জবর দখল করে তারা জমি খাচ্ছে। এছাড়াও তারা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত ভয় ভীতি হুমকি দিয়ে আসছে।
এদিকে ওই ঘটনার তদন্তে নেমে বাদী পক্ষের কাছে কাগজপত্র দেখতে চাইলে, তারা যে কাগজপত্র প্রদর্শন করেছেন তাতে এস খতিয়ান এবং আরএস খতিয়ানে ইসাহাক মিয়ার নাম লেখা রয়েছে যার পিতা ইয়াসিন মিয়া। ইসহাক মিয়া সম্পর্কে বাদী সাহাবুল শাহর দাদা। দাদার পরে পিতা, তারপর নিজে জমির হকদার হিসেবে থানায় এবং ৬ নং কাফুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে সাহাবুল শাহ একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এই ঘটনায় যে কোন মুহূর্তে ওই এলাকায় দুই পরিবারের মাঝে বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটারও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই ঘটনায় বিবাদী মোঃ হান্নান সরকারকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে সব ধরনের কাগজপত্র আছে। আমি সরকারি আইন অনুযায়ী জমি ভোগ দখল করছি।
এদিকে মোঃ হান্নান সরকারের কাছে তার বৈধ কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কাগজ দেখাতে চেয়ে দুই দিন অতিবাহিত করেও কাগজ নিয়ে আসেনি। দুদিন পর আবারো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সাবেক মেম্বার রুনুর সাথে যোগাযোগ করতে।
৪ নং কাফুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার ইখলাস আলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন রিসিভ করা হয়নি।
বিষয়টি জানতে মুঠো ফোনে নাটোর সদর থানায় ফোন করা হলে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেনি।