• মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন
Headline
সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে পুঠিয়া দুর্গাপুরে গনসংযোগ করলেন মুনি পুঠিয়ার ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো যেনো ঘুষের স্বর্গ রাজ্য, ছাড় পায় না ভিক্ষুকও রংপুরে উইঘুর মুসলিম নির্যাতন ও চীনের আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন নরসিংদীতে পরিক্ষা শেষে আর বাড়ি ফেরা হলো না এক এইচএসসি পরিক্ষার্থীর ফ্রিল্যান্সারদের ওপর কোনো কর আরোপ করা হয়নি: জুনাইদ আহমেদ পলক বাগমারায় এক আনসার ও তার ভাতিজা হেলালের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসি বিদেশ যেতে হলে খালেদা জিয়াকে আবার জেলে যেতে হবে, কোর্টে যেতে হবে হোটেলে ভাত খেয়ে ৩ লাখ টাকা বিল বাকি ছাত্রলীগ নেতার, থানায় অভিযোগ পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ঈদে মিলাদুন্নবীর জশনে জুলুসে বোমা হামলায় ৫০ অধিক নিহত প্রদেশটিতে ৩ দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরো অনেক বাড়তে পারে…. রাজশাহীর পুঠিয়ায় নানান আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন

রাজশাহীতে ৭ বছর ধরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১২ ব্যক্তির চাল ডিলারের পেটে

Reporter Name
Update : শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২
রাজশাহীতে ৭ বছর ধরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১২ ব্যক্তির চাল ডিলারের পেটে
রাজশাহীতে ৭ বছর ধরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১২ ব্যক্তির চাল ডিলারের পেটে

বিডি নিউজ২৩: খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডে অনিয়ম ও আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুয়া তালিকা তৈরি করে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের ১২ জনের নামে বরাদ্দ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীর চাল আত্মসাত করেছেন স্থানীয় ডিলার নিত্যানন্দ মন্ডল।

 

গত সাত বছর পর অবশেষে সুবিধাভোগীরা এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে। এদের একজনের নাম মিনতি রাণী। তিনি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারী সুবিধাভোগী। নিয়মিত তার নামে ১০ টাকা কেজি দরের (বর্তমানে ১৫ টাকা কেজি) চাল কেনা হয়েছে। তবে এটা জানতে সময় লেগেছে সাত বছর। শুধু তিনি একা নন একই গ্রামের আরও ১১জন কার্ডধারীরও সাত বছর সময় লেগেছে।

 

কর্মসূচির পরিবেশক (ডিলার) নিত্যানন্দ তাদের নামে বরাদ্দ চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তিনি নিজের নামও সুবিধাভোগীর তালিকাভূক্ত করেছেন। অথচ তিনি ও তাঁর স্ত্রী দুইজনেই স্কুলশিক্ষক। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর স্থানীয় ভাবে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।

 

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালাহ উদ্দীন বলেন, তিনি যে অপরাধ করেছেন তাতে তার ডিলারশিপ বাতিল হওয়াসহ আত্মসাৎ করা চাল ফেরত দিতে হবে। এই উপজেলায় এরকম শাস্তির নজিরও রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপজেলা সভাপতি ইউএনও এই বিষয়ে তদন্তের ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন।

 

সুজনের রাজশাহী বিভাগের সাবেক সমন্বয়ক সুব্রত পাল বলেন, দুঃস্থদের নামে বরাদ্দ এভাবে আত্মসাত করা অপরাধ। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী (ডিলার) ও জনপ্রতিনিধিদের কারণে সরকারের এই ভালো উদ্যোগটি বির্তকের জন্ম দিয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী বলে মন্তব্য করেছেন।

 

বাগমারা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি কার্যক্রম শুরু হয়। কর্মসূচির চাল বিক্রির জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে দুইজন করে পরিবেশক নিয়োগ দেয়া হয়। তারা চালগুলো বিক্রি করবেন। এই কর্মসূচির আওতায় দুঃস্থদের তালিকা প্রস্তত করে অনুমোদনের পর তাদের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়। ওই কার্ডের মাধ্যমে বছরের পাঁচ মাস ১০টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবেন উপজেলা কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া ডিলারদের কাছ থেকে। সে মোতাবেক সাত বছরে প্রতারিত ১২ ব্যক্তির ৩১৫ মণ চাল ডিলারের পেটে গেছে। গত আগস্ট মাস থেকে ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ডিজিটাল ডাটাবেজ’ প্রস্তুত শুরু করে খাদ্য বিভাগ। তালিকা হালনাগাদ করার জন্য সুবিধাভোগিদের ছবিসহ তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে সুবিধাভোগী কার্ডধারীদের তথ্য সংগ্রহের সময় কাচারী কোয়ালীপাড়ার আট নম্বর ওয়ার্ডের ১২ জন ব্যক্তি জানতে পেরেছেন তারা ২০১৬ সাল থেকে তালিকাভূক্ত। তাদের নামে বরাদ্দ চাল সাত বছর ধরে পরিবেশক উত্তোলন করে আসছেন।

 

বিষয়টি তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানান এবং প্রতিকার চান। তারা অভিযোগ করেন, ইউনিয়নের নিয়োগ পাওয়া পরিবেশক নিত্যানন্দ মন্ডল চালগুলো আত্মসাত করেছেন।

 

কাচারী কোয়ালীপাড়া গ্রামের অনিক কুমার, আজাদ হোসেন, আবদুল মান্নান, ইভা রানী ও সুষমা রাণী জানান, তারা যে কর্মসূচির সুবিধাভোগী তা জানতেন না। কোনো দিন চালও কেনেননি ডিলারের কাছ থেকে। তাদের কোনো কার্ড সরবরাহ করা হয়নি। অথচ তাদের নাম তালিকাভূক্ত করে রীতিমত চাল আত্মসাত করেছেন ডিলার।

 

মিনতি রাণী বলেন, তিনি কার্ডের জন্য চেয়ারম্যান, সদস্য ও ডিলারের কাছে ধর্না দিয়েও তালিকাভূক্ত হতে পারেনি। অথচ নতুন ভাবে আবেদন করতে গিয়ে জানতে পেরেছেন তিনি সাত বছর ধরে এই সুবিধাভোগী। তিনি এজন্য ডিলারকে দায়ী করে তার বিচারের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

 

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকার ১৮৩ নম্বরে নাম থাকা কাচারী কোয়ালীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা পুলিশ সদস্য মিঠুন কুমার বলেন, তিনি কয়েক বছর ধরে চাকরির সুবাদে এলাকার বাইরে আছেন। তিনি বা পরিবারের কোনো সদস্য কখনো চাল কিনেন না। তবে ডিলার তার অত্মীয়।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাচারী কোয়ালীপাড়া গ্রামের একজন ওষুধ ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, তার নামও তালিকায় দেখে অবাক হয়েছেন। তার নামে সাত বছর ধরে চাল তুলে আত্মসাত করা হয়েছে।

 

এদিকে অভিযুক্ত ডিলারের আওতায় থাকা ৪৫০জনের তালিকা ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে ব্যাপক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। ব্যবসায়ী, ধনী ব্যক্তিদের নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছিলো। এর মধ্যে ডিলার নিজের নামও সুবিধাভোগীর তালিকাভূক্ত করেছেন (তালিকা নম্বর ৯৩)। অথচ তিনি ও তার স্ত্রী চাকরিজীবী। দুইজনেই পেশায় স্কুলশিক্ষক। ডিলার হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার সময় ও পরবর্তী পর্যায়ে (২০২০ পর্যন্ত) তিনি কাচারী কোয়ালী পাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

 

কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৪০ জন সুবিধাভোগীর নাম তালিকাভূক্ত করে নামের বরাদ্দ চাল আত্মসাতের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কাচারী কোয়ালীপাড়া গ্রামের ১২ জনের বিষয় স্থানীয় ও প্রতারিতরা নিশ্চিত করেছেন। এর বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অভিযুক্ত পরিবেশক (ডিলার) নিত্যানন্দ মন্ডল তিন জনের নামে বরাদ্দ চাল আত্মসাত করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।

 

তিনি জানান, সাবেক একজন চেয়ারম্যানের প্ররোচনায় এই অনিয়ম হয়েছে ।

সংবাদটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Recent Comments

No comments to show.