রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার খাঁপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী সরদার দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তাঁকে বীর মুক্তিযোদ্ধা না বলে অস্বীকৃতি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এরই প্রতিবাদে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামের পাশে অবস্থিত বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী সরদার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বাগমারা উপজেলার খাঁ পুর গ্রামের মৃত আব্দুল সরদারের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনের বিবৃতিতে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেছি। মহান আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন তাই আপনাদের সামনে কথা বলতে পারছি। নতুবা শহীদদের খাতায় হয়তোবা আমার নামটা লিখনী হত। আমার এলাকার খাঁপুর দাখিল মাদ্রাসার দুর্নীতি অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাকে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মোঃ আবদুল আজিজ, সভাপতি মকলেছুর রহমান দুলাল, লুৎফর রহমান দুলাল মেম্বার, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জাব্বার, আমাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলেছে। যার প্রমাণ ঐ মাদ্রাসার অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেখানে সরকার আমাকে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার সম্মান, ও সম্মানী ভাতা।
তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে খাঁপুর দাখিল মাদ্রাসার অবৈধ কমিটি গঠন, মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাৎ ও নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়। এ সম্পর্কে দুর্নীতি বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি মিথ্যা অপবাদের মুখোমুখি হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। খাঁপুর দাখিল মাদ্রাসার অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্যে প্রতিবছর মাদ্রাসার ২০ হাজার টাকার হদিস থাকে না। মাদ্রাসার মার্কেটের প্রতিটি দোকান থেকে জামানত বাবদ ২ হাজার টাকা জমা হয় সেই সাথে প্রতিমাসে ভাড়া ৪০০ টাকা। মাদ্রাসার ২৫ শতক জমি বন্ধক বাবদ আদায় ১ লক্ষ১০ হাজার টাকা।
মাদ্রাসার গাছ বিক্রি বাবদ ১০,০০০ টাকা।
গ্রাম থেকে মাদ্রাসার জন্য প্রতি বৎসর ধান উত্তোলনসহ ৫০ হাজার টাকা জমা হয়। যে টাকাগুলোর হিসাব জানতে চাইলে চাঁদাবাজ বলে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেন। নৈশ প্রহরী সরদার মোঃ ইসমাইল দায়িত্বে থেকে বেতন উত্তোলন করে। কিন্তু রাত্রে কোন পাহারা দেয় না।
অভিভাবকবৃন্দ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাদেরকেও নানানভাবে অপমানিত ও হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করা হয়। যার তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে এর সত্যতা। কাউকে না জানিয়ে ছাত্র অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধি যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেটিও অবৈধ। খাঁপুর দাখিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের যোগ্যতা নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। তার তিনটা সার্টিফিকেট তৃতীয় শ্রেণি ও একটি দ্বিতীয় শ্রেণি। কি ভাবে এই যোগ্যতা দিয়ে তিনি প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করতে পারেন জনমনে প্রশ্ন।অবৈধ কমিটি ও দুর্নীতি-অনিয়মের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছেন তিনি। সেই সাথে তাঁর নামে যে মিথ্যা অপবাদ ও ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে সমগ্র বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধাদের অপমান করেছে এর বিচার চেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী সরদার।