বিডি নিউজ২৩: নাটোরের সিংড়ার পাকুরিয়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২টি বাড়ি ও ৬টি দোকান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার পর থেকে এসব ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। অভিযোগ উঠেছে, ৩নং ইটালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফের সমর্থকরা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আরিফুল ইসলাম বলছেন, এ বিষয়ে আমি কোনোভাবে জড়িত না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাকুরিয়া গ্রামে মুক্তা ঠাকুর এবং মানিক ঠাকুরের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পরে লুটপাটের মালপত্র ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে গেছে অভিযুক্তরা। এঘটনার পর হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। লুটপাটের পরে সন্ধ্যায় সিংড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আরিফা জেসমিন কনিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে একটি স্ট্যটাস দিয়েছেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, নাটোরের সিংড়ায় ৩নং ইটালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ এর নেতৃত্বে পাকুরিয়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২টি বাড়ি ও ৬টি দোকান ১৯৭১ ও ২০০১ এর মত ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। মুক্তা ঠাকুর এবং মানিক ঠাকুরের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। লুটপাটের মালপত্র ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে যায়।
স্ট্যাটাসে তিনি আরো লিখেন, নির্যাতিতদের ভাষ্যমতে ৯৯৯ ফোন করে আধা ঘন্টা ধরে চেষ্টা করেছে। কিন্তু সিংড়া থানা পুলিশ ফোন রিসিভ করেনি। লুটপাটের পরে সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ নিউজ করারও সাহস পায়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং প্রশাসনের কাছে আমি এই সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ৩নং ইটালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ বিবার্তাকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনোভাবে জড়িত না। ওখানে মসজিদের ইমাম নেয়া নিয়ে ঝামেলা। মসজিদের ইমাম নেয়া নিয়ে আমার কি রাজনৈতিক লাভ লোকসান তা বোধগম্য না।
তিনি বলেন, ওখানে ঝামেলা হয়েছে শুনে ওসির সাথে কথা বলেছি, ওসিকে পাঠানো হয়েছে। যারা দাবি করছে তাদের দোকানপাট ভাঙচুর হয়েছে তাদের সাথে কথা বলেছি, প্রতিনিধি পাঠিয়েছি আমি নিজে গিয়েছি। আমরা আশ্বস্ত করেছি কোনো সমস্যা নাই। কালকে পর্যন্ত আমার নামে কোন কিছু নাই। বিকেলে ঘটনা সারারাত গেলো, হঠাৎ করে বেলা ১২টার পর একটা পোস্ট যখন দেখলাম থানা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে তখন থেকে আমি হয়ে ভিকটিম হয়ে গেছি। আমি গত সাত দিন পাকুরিয়াতে যাইনি।
তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি দোকান এর মধ্যে একটাতে মেম্বার চেম্বার করে বসতো সেই জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।