বিডি নিউজ২৩: কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ করেছেন একই কমিটির এক নেত্রী। তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জ। আর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের একাধিক নেতার দাবি আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এ ঘটনায় সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী। অভিযোগপত্রে আরও তিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
তারা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের পিয়ারাতলা এলাকার সোহেল রানার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ফারদিন সৃষ্টি, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য একই এলাকার হৃদয় ও মোহাইমিনুল মিরাজ।
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার ব্যক্তিগত কিছু ছবি ফেক আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছেন ওই তরুণী।
অভিযোগকারী তরুণী (১৯) কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি চলতি বছর কুষ্টিয়ার মিরপুর ছাতিয়ান আব্দুল বাছেত বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অনার্সে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
অভিযোগপত্রে তরুণী উল্লেখ করেন, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করতাম। একপর্যায়ে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাবসহ শ্লীলতাহানির চেষ্টা করায় প্রায় একমাস আগে তার কাছ থেকে সরে আসি। এরপর থেকে তিনিসহ অন্যান্য বিবাদীরা আমার সঙ্গে রাস্তাঘাটে দেখা হলে বিভিন্ন আজেবাজে কথাবার্তা বলাসহ আমাকে ফলো করতে থাকেন।
পরে একটি ফেক আইডি খুলে আমার ছবি এডিট করে বিভিন্ন আজেবাজে কথাবার্তা-সম্বলিত পোস্ট দিতে থাকেন পারেন। এ ধরনের কার্যকলাপ করতে নিষেধ করলে বিবাদীরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকসহ অভিযুক্তরা আমার ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমার এবং আমার পরিবারের সম্মান চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছেন। আমি তাদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমার কাছে কোনো প্রমাণ নেই। তবে আমি ধারণা করছি চ্যালেঞ্জ ও তার লোকজন এসব করছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জ বলেন, প্রতিপক্ষের ওই তরুণীর অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এব্যাপারে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ওই মেয়েটি আমার ছোট বোনের মতো। মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তুলে আমাকে ফাঁসানো চেষ্টা করছে প্রতিপক্ষ।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতা বলেন, চ্যালেঞ্জ ভালো মানুষ ও জনপ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আগে কোনদিন শুনিনি। পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষের লোকজন চ্যালেঞ্জকে ফাঁসানোর জন্য নোংরামি করছে। তাছাড়া যে তরুণী অভিযোগ এনেছে তার চরিত্র ভালো না, এটা কুষ্টিয়ার সবার জানা। ওই তরুণীর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেনের অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, দলীয় কোনো বিষয় নিয়ে সম্ভবত তাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা হয়ে থাকতে পারে।