বিডি নিউজ২৩: রাজশাহীর বাগমারায় এক কলেজ অধ্যক্ষকে নারীসহ নিজ বাড়িতে আটকে রেখে মারধর ও টাকা নিয়ে আপস-রফার খবর পাওয়া গেছে।
গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তারপর থেকে দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভবানীগঞ্জ পৌরশহরে ব্যপক কৌতুহল ও আলোচনা সমালোচনা চলছে।
জানা গেছে, ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান শিবলীকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া মহল্লার হেলিপ্যাড মাঠের পাশে নিজ বাড়িতে নারীসহ অবরুদ্ধ করে স্থানীয় কিছু তরুণ। এসময় অবৈধ সর্ম্পক স্থাপনের অভিযোগ তুলে তাকে উত্তম মাধ্যম দেওয়া হয় বলে এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কোন একসময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে অধ্যক্ষ আতাউর রহমান শিবলী জনৈক নারী (২২) কে বাড়িতে ডেকে নেন। রাতে ওই নারী উপজেলার চাঁনপাড়া হেলিপ্যাড সংলগ্ন বাসায় প্রবেশ করে।
সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় কিছু তরুণ সেই বাড়িতে প্রবেশ করে এবং বাড়িটি অবরুদ্ধ করে রাখে। একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এসময় প্রতিবেশি উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ আক্তার বেবীসহ এলাকার লোকজন বাড়িঘর ঘিরে রাখেন। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন মমতাজ আক্তার বেবী।’
প্রকাশিত খবরে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বেলা ১২টা পর্যন্ত বাড়িতে নারীসহ তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে লোকজন। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষের কিছু ভাড়াটে ক্যাডার ঘটনাস্থলে এসে তাকে নারীসহ মুক্ত করে নিয়ে যায়।তবে এসময় স্থানীয়দের গণধোলাইয়ের শিকার হন অধ্যক্ষ।’
স্থানীয় লোকজন বলেন, এর আগেও শিবলীর একাধিক নারী কেলেংকারীর ঘটনা রয়েছে। তবে এবারের ঘটনা বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে বলে উল্লেখ করেন তারা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁনপাড়া মহল্লার কয়েকজন জানান, শিবলীকে আটকে রাখা তরুণদের মধ্যে কয়েকজন তাকে সেখান থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার আগে বাড়িতে ঢুকে মারধর করে। স্থানীয়রা আরো জানান, প্রায় পাঁচ লাখ টাকায় ঘটনাটি রফা হলে তরুণেরা মোটরসাইকেলে করে শিবলী ও আদরী নামের ঐ নারীকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়। তারপর শিবলীকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মোটরসাইকেল শোরুমে নামিয়ে দিয়ে তরুণীকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। তরুণরা এলাকায় প্রভাবশালী মহলের মদদপুষ্ট বলে এই প্রতিবেদককে তাদের নাম জানতে অস্বীকৃতি জানান স্থানীয়রা।
অধ্যক্ষ আতাউর রহমান শিবলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় তার প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী, শিক্ষকাসহ বিভিন্ন বয়সী নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সর্ম্পক স্থাপনে অভিযোগ রয়েছে। পরীক্ষায় ছাত্রীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ারও প্রলোভন দেখান তিনি। এনিয়ে বিভিন্ন সময় খবরের কাগজে সংবাদ প্রকাশ এবং উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদানের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে। তবে এবারের ঘটনাটি বেশ রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় অনেকেই।
ঘটনার সাথে জড়িত তরুণীর নাম আদরী এবং তিনি উপজেলার বড় বিহানালী ইউনিয়নের কহিতপাড়া গ্রামের জনাব আলীর কন্যা বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে গনমাধ্যম কর্মীরা বাগমারা থানার ওসি রবিউল ইসলাম কে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, এই বিষয়ে কিছুই জানেন না। কেউ থানায় অভিযোগও করেনি। করলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আতাউর রহমান শিবলী ফোন রিসিভ করেননি।