শাহাদত হোসাইন: (রাজশাহী) পুঠিয়া উপজেলায় জাল সনদে চাকরি করা শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
(১) মোঃ জয়, সহকারী শিক্ষক কৃষি, বিলমাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, (২) মোঃ হাফিজুর রহমান, সহকারী শিক্ষক কম্পিউটার, ভালুকগাছি গোয়ালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়। (৩) সুশীলা রানী, সহকারী শিক্ষক, খ্রিস্টান ধর্ম, ধোকড়াকুল উচ্চ বিদ্যালয়। (৪) মোঃ সাইদুর রহমান, সহকারী শিক্ষক কৃষি, ধোকড়াকুল উচ্চ বিদ্যালয়। (৫) মিস শামীম আরা খাতুন, সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা, শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয়। (৬) দুলাল আহমেদ, প্রভাষক, কৃষি, ইনডেক্স, পচামাড়িয়া ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়।
উপরোক্ত শিক্ষকগণ ছাড়াও, যদি উপজেলায় আরো কোনো শিক্ষক জাল সনদে চাকরি করে থাকেন, সেগুলোও আস্তে আস্তে প্রকাশ হবে।
রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের জাল সনদে চাকরিরত শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ (ডিআইএ)। ডিআইএ ২০১৩ সাল থেকে ২৫ মে পর্যন্ত সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে মোট ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের শিক্ষাগত এবং যোগ্যতার সনদ ভুয়া বলে তথ্য পেয়েছে।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) অনুসন্ধানে এসব জাল সনদধারীর তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বেতনের টাকা ফেরত নিতে এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে ডিআইএ।
জাল সনদ দেখিয়ে চাকরি অথবা এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষকদের কাছ থেকে মোট কত টাকা ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে কয়েকটি বিভাগের তথ্য পাওয়া যায়। যেমন খুলনা ও বরিশাল বিভাগে জাল সনদে শিক্ষক হয়ে বেতন নেওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিআইএ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে। ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর বলেন, ডিআইএর পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
একসময় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে পরিচালনা কমিটির একচ্ছত্র ক্ষমতা ছিল। এখন এনটিআরসিএর মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। এনটিআরসিএর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ ছাড়া শিক্ষক হওয়ার সুযোগ নেই। ডিআইএর প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, যে ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের সনদ জাল বলে পাওয়া গেছে, তাঁদের মধ্যে ৭৯৩ জন এনটিআরসিএর শিক্ষক নিবন্ধনের ভুয়া সনদ দেখিয়েছেন। অন্যদের মধ্যে ২৯৬ জনের কম্পিউটার শিক্ষার সনদ এবং ৬৭ জনের বিএড, গ্রন্থাগার, সাচিবিক বিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের সনদ জাল।
ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে জাল সনদধারী শিক্ষক আছেন ৪৪৩ জন। তাদের মধ্যে স্কুল-কলেজে কর্মরত ৩২৩ জন। মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে আছেন ১২০ জন। ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে জাল সনদে শিক্ষকতা করছেন ৩৬৬ জন। তাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজে কর্মরত ২৫৬ জন, যাদের কাছ থেকে ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ফেরতের সুপারিশ করা হয়েছে। এ দুই বিভাগের মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন ১১০ জন, যারা ৪ কোটি ৩৫ লাখেরও বেশি টাকা জাল সনদে এমপিও বাবদ আত্মসাৎ করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা আখতার জাহান বলেন, এ বিষয়টি আমি শুনেছি। জাল সনদে চাকরি করা বিশাল অন্যায় কাজ। যারা এর সাথে জড়িত তাদের সবার শাস্তি হওয়া উচিত। পরবর্তীতে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। (সূত্র: amader barta)