শাহাদত হোসাইন, বিডি নিউজ২৩: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ৪ নং ভালুকগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাকবীর হাসানের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি অনুদান ঠিকমতো বিতরণ না করা, শহীদ মিনার এবং বঙ্গবন্ধুর মূরাল অব্যবস্থাপনার মত গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ৪ নং ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদের অভ্যন্তরে তৈরি করা হয়েছে শহীদ মিনার। কিন্তু তা অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে দেখার যেন কেউ নেই। শুধু তাই নয় শহীদ মিনারের সাথেই রয়েছে টয়লেট এবং টয়লেটের হাউস। এই বিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ। সাধারণ মানুষের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে গিয়ে দেখা যায় যে, গতবার শীতে গরিবদের জন্য দেয়া সরকারি কম্বল সেখানে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে অথচ অনেক গরিব মানুষ সেই কম্বলের কারণে শীতে অনেক কষ্ট করেছেন। কেউ কেউ বলছেন একটি কম্বলের জন্য বারবার ধরনা দিয়েও চেয়ারম্যান তাদেরকে সরকারি শীতবস্ত্র কম্বল দেয়নি।
অন্য আরেকজন সাধারণ মানুষ বলেন, চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান আমাদেরকে সরকারি ঘর দেয়ার নাম করে বেশ কিছু মানুষের কাছ থেকে ২২৫০ টাকা করে নেয়। ভুক্তভোগীদের মধ্যে থেকে চারজন টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে বারবার ধরনা দিয়েও সেই টাকা ফেরত না পেয়ে অবশেষে, উপজেলায় সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ জানান। তারপর এদের মধ্যে থেকে অভিযোগ দাখিলকৃত চারজন ব্যক্তি টাকা ফেরত পান। বাকি অন্যজনরা চেয়ারম্যানকে দেয়া ওই টাকা আর ফেরত পায়নি। এভাবেই বলছিলেন সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে টাকা দেওয়া এক ব্যক্তি।
একই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার বেলাল হোসেন তিনি বলেন, বাথরুমের সাথে শহীদ মিনার বড়ই বেমানান কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। শহীদ মিনারটি তৈরি করার সময় আমরা সবাই মিলে বলেছিলাম শহীদ মিনারটি রাস্তা পাশে খোলা জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তৈরি করার জন্য, চেয়ারম্যান আমাদের কারো কথা কোনো গুরুত্ব না দিয়ে, নিজের ইচ্ছামত পরিষদের ভেতরে বাথরুমের হাউজের সাথে তৈরি করেছেন। শহীদ মিনারটি তৈরি করার পর থেকে পরিচর্যার কোনো কাজ করা হয়নি। চারিদিকে ঘাস জঙ্গলে ভরে গেছে, সেদিকেও কোন গুরুত্ব দেয়ার মত ভাবনা তার মধ্যে আমরা দেখতে পাইনি।
এছাড়াও মেম্বার বেলাল হোসেন তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান একজন রাজাকার পরিবারের সন্তান, যার কারণে হয়তোবা তিনি শহীদ মিনারটিকে এভাবে অযত্ন অবহেলায় ফেলে রেখেছে। সরকার অনেক অনুদান দিয়েছেন কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন না হলেও, পরিবর্তন হয়েছে চেয়ারম্যান তাকবীর হাসানের ভাগ্যের। এছাড়াও তিনি ইউনিয়ন পরিষদের নানান অনিয়ম-দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন।
চেয়ারম্যান তাগির হাসান সম্পর্কে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমান তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ছোট্ট একটু জায়গায় শহীদ মিনার হবে এটা ভাবা যায় না। তাছাড়া পাশে টয়লেটের হাউজ রয়েছে এটা কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না। দুর্গন্ধযুক্ত টয়লেটের হাউজের পাশে শহীদ মিনার এটা এলাকাবাসীর জন্য নেককারজনক ঘটনা, এবং ভালুকাগাছি ইউনিয়নবাসীর জন্যেও নেককারজনক ঘটনা। শহীদ মিনার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার শামিল। এমন টাই বলছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ জিল্লুর রহমান।
অভিযোগের সত্যতা জানতে মুঠোফোনে চেয়ারম্যান তাকবীর হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ সত্য নয়, ভিত্তিহীন, বানোয়াট। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার মাত্র। এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই।