বিডি নিউজ২৩: বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রেমিকের মোটরসাইকেল ছিনতাই করার অভিযোগে বৃষ্টি আখতার (২০) নামে এক প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃষ্টি আখতার বগুড়া সদরের সিরাজুল ইসলাম সেতুর স্ত্রী।
রোববার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ছিনতাই করা মোটরসাইকেল উদ্ধার করলেও এ ঘটনায় জড়িত বৃষ্টির স্বামী সিরাজুলকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। গ্রেফতারকৃত বৃষ্টি আখতার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম।
এসময় জানানো হয়, কিছুদিন আগে বগুড়া সদর থানার দাড়িয়াল গ্রামের আব্দুল ওয়াহাব লটারিতে একটি এ্যাপাচি ফোরভি ১৬০ সিসি মোটর সাইকেল পান। ওয়াহাব ও তার ছেলে রবিন (১৭) মোটরসাইকেলটি চালায়। পাশের গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সেতু মোটরসাইকেলটি ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সিরাজুল তার স্ত্রী বৃষ্টিকে রবিনের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে দেয় এবং তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করতে বলে। স্বামীর পরামর্শে বৃষ্টি রবিনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর রবিনের সাথে দেখা করার প্রস্তাব দেয় বৃষ্টি। সেই অনুযায়ি গত ৯ আগস্ট দুপুরের পর রবিন তার বন্ধু নিরবকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে শিবগঞ্জ উপজেলার ভাসুবিহার নরপতির ধাপ এলাকায় যায়।
সেখানে বৃষ্টি আগে থেকেই রবিনের জন্য অপেক্ষা করছিল।
রবিন তার বন্ধুকে সাথে নিয়ে ভাসুবিহার নরপতির ধাপে পৌঁছে বৃষ্টির সাথে দেখা করে। তারা দু’জনে নির্জন স্থানে বসে গল্প শুরু করে। এই সুযোগে বৃষ্টি তার স্বামীকে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে দেয়। বৃষ্টি তার প্রেমিকের সাথে গল্প করার সময় আগে থেকেই নিয়ে আসা চেতনানাশক মিশ্রিত পানীয় পান করায়। কিছুক্ষণের মধ্যে রবিন অসুস্থবোধ করে।
এমন সময় বৃষ্টির স্বামী তার এক সহযোগিকে সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছে নিরব এবং বৃষ্টিকে সেখানে বসে প্রেম করার অপরাধে চড় থাপ্পড় দিয়ে নিরবের মোটরসাইকেলসহ তাকে তুলে নিয়ে যায়। কিছুদুর গিয়ে ফাঁকা স্থানে নিরবকে মারপিট করে রাস্তায় ফেলে রেখে মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন নিয়ে সিরাজুল পালিয়ে যায়।
গত ১৪ আগস্ট রবিনের মা রোজিনা আখতার শিবগঞ্জ থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ অভিযান শুরু করে। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় পুলিশ বৃষ্টি আখতারের অবস্থান শনাক্ত করে এবং তাকে গ্রেফতার করে। এসময় বৃষ্টির হেফাজত থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। বৃষ্টির স্বামী পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ বৃষ্টির দেওয়া তথ্য মতে দিনাজপুরের বিরামপুর থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বৃষ্টিকে আদালতর মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বৃষ্টির স্বামী সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।