নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় এক বিদ্যালয়ের শ্রেণী ভিত্তিক ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দের ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছে।সোমবার(৭ আগস্ট) উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আলাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম ও আস্টম শ্রেণীর মধ্যে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ খেলায় গোল হওয়া আর না হওয়া কে কেন্দ্র করে স্থানীয় দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আলাইপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলা দেখতে যান স্থানীয় সাহারুল, দুর্জয় সহ আরও অনেকে। খেলার এক পর্যায়ে একটি গোল হয় তখন লাইসম্যান অবসাইট ধরে। এ সময় অবসাইট ধরে গোল কেন দেওয়া হলো না এ নিয়ে দর্শকদের মধ্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দুর্জয় গোল হওয়ার পক্ষে ছিল। স্কুলের খেলা হওয়ায় সাহারুল সবাইকে থামতে বললে দুর্জয় সাহারুলকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তখন সাহারুলের পক্ষের লোকজনের সাথে দূর্জয়সহ তার পক্ষের লোকজনের হাতাহাতি হয়। উপস্থিত লোকজন তাদের থামিয়ে খেলার মাঠ থেকে বিদায় করে দেয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১২টার সময় আলাই পুর বাজারের উজ্জ্বলের বন্ধ চায়ের দোকানে আলাইপুর এলাকার দুলালের ছেলে দূর্জয় (১৮), কালুর ছেলে পিটার ও ইয়ানসের ছেলে ইব্রাহিম হাতুড়ি ও ধারালো চাকু হাতে সাহারুলের পক্ষের একই এলাকার সামাদের ছেলে সাদ্দাম (২৮) কে আক্রমণ করতে গেলে কামরুল, মুক্তি, মজনু, হাকিম সহ উপস্থিত লোকজন বাঁধা দেয়।
পরবর্তীতে সাহারুল মুঠোফোনে সিদ্দীক কে মিমাংসা করার জন্য ডাকে। এ ঘটনা নিরশনের জন্য সিদ্দীক বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রহমান ও প্রধান শিক্ষক সহ অনেকের সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তুু এ চেষ্টা সফল করতে দেয়নি দুর্জয়ের মামা সাহাবুল।
বৃহস্পতিবার (১১ আগষ্ট) দুপুর আনুমানিক ১২ টার সময় আলাইপুর দক্ষিণ পাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে সিদ্দিক ও তার চাচা জিল্লু মসজিদের নির্মাণ সম্পর্কে কথা বলছিলেন এ সময় দুর্জয় ও দিপু এসে ঘটনার নিরসন চেষ্টার অপরাধে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। জিল্লু নিষেধ করলে ধাক্কা মারে টিপু। এ বিষয়ে সিদ্দিক প্রতিবাদ করলে পেছন থেকে সিদ্দিকের পিঠে চাকু বসিয়ে দেয় দূর্জয়। তখন এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ধাওয়া করে দুর্জয় কে।
দুর্জয় ভয় পেয়ে দৌড়ে পালায় তার বাড়ির নিজ স্বয়ন কক্ষে। এ সময় সিদ্দিকের স্বজনরা দূর্জয়ের ঘরের দরজা ধাক্কা ধাক্কি করতেই খুলে যায় দরজা। ভেতরে ঢুকতেই হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করে দুর্জয়। এতে চাকুর আঘাতে পায়ের উপরিভাগে কেটে গুরুতর আহত হয় চপল নামের এক যুবক। তাকে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তবে চপলের পায়ের কাটা জায়গায় ১৭টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
ছুরিকাঘাতে চপলকে আহত করলে উপস্থিত লোকজন দুর্জয় কে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে এতে দূর্জয়ও আহত হয়। আহত অস্থায় দূর্জয়কে স্থানীয়রা বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে । দূর্জয়ের মাথায় ৫টি সেলাই দেওয়া হয়। বর্তমানে দুর্জয় বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
এ ব্যাপারে দূর্জয় বলেন, বেশ কিছুদিন আগে মেরাজ চেয়ারম্যান এর বাড়িতে ভাঙচুর হয়। সেই ঘটনায় আমাকে সন্দেহ করে বিভিন্ন সময় ভয় দেখাতো তারা। কিছু দিন আগে সিদ্দিকের ফেন্সিডিল ধরে প্রশাসন। এ বিষয় আমাকে প্রশাসনের সোর্স সন্দেহ করে। এছাড়াও তিন দিন আগে আমার মোটরসাইকেল গাড়ি চেয়েছিল, কিন্তু আমি তাদের গাড়ি দেইনি। আমি মাঠে ফুটবল খেলা দেখতে গেলে তারা আমাকে মারধর করে। আমি অসহায় ও তাদের থেকে দূর্বল হওয়াতে বিষয় টি নিয়ে কিছুই করতে পারিনি। হঠাৎ আজ দুপুরে সিদ্দিক, চপল, বারু, সোহাগ, সাহারুল, কাজল, সবুজ ও সাদ্দাম সহ প্রায় ১৫ জন আমার বাড়ি ঘর দরজা ভেঙে আমার নিজের বাড়ীতেই আমাকে হাসুয়া , হাতুড়ী দিয়ে মারধোর করে এই অবস্থা করেছে।আমি তাদের শাস্তি চাই।
এ ঘটনায় দূর্জয়ের মা বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।সেই রাতে মেহেদী হাসান (১৭)নামের যুবককে আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)সাজ্জাদ হোসেন সাজু বলেন, দূর্জয়ের বাড়িতে হামলা ও তাকে মারধরের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় একজনকে আটক করা হয়েছে। বিবাদীগণ এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি।