বিডি নিউজ২৩/BD News23: পঞ্চগড় সদর উপজেলায় পাওনা টাকা ফেরত পেতে মরদেহ নিয়ে দেনাদারের বাড়িতে অবস্থান নেন স্বজনরা। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাতভর অপেক্ষার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিষটি সুরাহা হয়। শুক্রবার (১২ আগস্ট) সকালে মরদেহটি দাফন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ছেলের চাকরির জন্য দুই বছর আগে দারুল ফালাহ দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি জুলফিকার আলী প্রধানকে কয়েক ধাপে ১২ লাখ টাকা দেন একই গ্রামের দবিরুল ইসলাম প্রধান (৫৬)।
দীর্ঘ দিন আশ্বাস দিলেও দুই মাস আগে জানানো হয়, চাকরি হবে না। এরপর টাকা ফেরত চাইলে শুরু হয় টালবাহানা। মাস খানেক আগে টাকা চাইতে গেলে দবিরুলকে লাঞ্ছিত করে বাড়ি থেকে বের করে দেন জুলফিকার।
ওই ঘটনার পর স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন দবিরুল। চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক হলে গত ৭ আগস্ট ফের স্ট্রোক করেন তিনি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান।
নিহতের স্বজনদের দাবি, টাকার চিন্তায় স্ট্রোক করে মারা গেছেন দবিরুল। তারা বলেন, পাওনা টাকা ফেরত পেতে মরদেহ নিয়ে জুলফিকার আলীর বাড়িতে অবস্থান নিই। রাতভর অপেক্ষার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে মরদেহ দাফন করি।
দবিরুলের ভাই বদিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাতিজাকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে ১২ লাখ টাকা নেয় জুলফিকার। জমি ও গরু বিক্রি করে টাকার জোগাড় করা হয়। কিন্তু জুলফিকার চাকরি না দিয়ে প্রতারণা করেছে। টাকা ফেরত চাওয়ায় ভাইকে লাঞ্ছিত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমবার স্ট্রোক করার পর চিকিৎসার জন্য মাত্র পাঁচ হাজার টাকা চাইতে গেলে জুলফিকার এবং তার পরিবারের লোকজন ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এই অপমান সইতে না পেরে ভাই আবার স্ট্রোক করেন এবং মারা যান।’
দবিরুলের ছেলে সবুর বলেন, ‘বাবা মারা গেলে মরদেহ নিয়ে জুলফিকারের বাড়িতে অনশন শুরু করি। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিনের বাসায় বিষয়টি নিয়ে বৈঠকের পর মরদেহ দাফন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠকে জুলফিকার নগদ এক লাখ টাকা ও পাঁচ লাখ টাকার চেক দেন। বাকি টাকা ফেরত দিতে দুই মাসের সময় নিয়েছেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ‘পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা সমাধান করেছেন।