• সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহীতে নার্সিং শিক্ষার্থীদের এবার প্রতীকি ক্লাস ও বই পড়া কর্মসূচি আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে তাহেরপুর পৌরসভায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গণপিটুনিতে মৃত্যু রাজশাহীতে অধ্যক্ষের সাথে নারী প্রভাষকের পরকীয়ার সময় ধরে থানায় দিল জনতা দুর্গাপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল প্রতিনিধিদের দৌরাত্বে অতিষ্ঠ রোগী ও স্বজনরা রাজশাহীতে বিএনপির বিরুদ্ধে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন গণঅধিকার পরিষদ ট্রাক প্রতীকে নিবন্ধন পাওয়ায় মানিকগঞ্জে আনন্দ মিছিল রাজশাহীর দুর্গাপুর প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমাজের আহ্বায়ক কমিটি গঠন বাগমারার সাবেক এমপি-মেয়রের বিভিন্ন অপকর্মের বিচার চেয়ে মানববন্ধন পুঠিয়ায় হাসিনা, কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ ১৮১ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের

স্কুল ছাত্র রাজিব হত্যাকান্ডের আসল রহস্য কি? কে ওই বড় ভাই?

সংবাদদাতা:
সংবাদ প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০২২
বিডি নিউজ২৩
স্কুল ছাত্র রাজিব হত্যাকান্ডের আসল রহস্য কি? কে ওই বড় ভাই?

রাজশাহীর বাঘায় চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্র রাজিব হত্যাকান্ডের আড়ালে থাকা প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করার দাবীতে সোচ্চার হচ্ছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসি। আজ মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে নিহত রাজিবের পিতা ও এলাকাবাসি এ দাবি করেন।

 

নিহতের পিতা ও মামলার বাদি চকছাতারী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত ৭ জুলাই আমার ছেলে স্কুল ছাত্র রাজিবকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর আমি বাদি হয়ে বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। যার জি/আর মামলা নং ৭/২২। হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ স্থানীয় তিন জনকে আটক করে। আটকের পর হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু আমাদের দাবি, রাজিব হত্যার বিষয় নিয়ে যে বক্তব্য আসছে, তা সাংঘর্ষিক ও উদ্দ্যেশ্য প্রনোদিত।

 

পুলিশের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে আমরা জানতে পারি, রাজিবকে ২০ হাজার টাকা এবং ৩০ হাজার টাকার মোবাইল সেট ছিনতাই করতেই তাকে হত্যা করা হয়। এছাড়াও আরও বলা হয়, রাজিব বিকাশ হ্যাকার, মাদকসেবি ও মাদক বিক্রেতা ছিলো। একটি কোমলমতি স্কুল ছাত্র হত্যাকান্ডের ঘটনায় এ ধরনের বক্তব্যে আমরা মর্মাহত ও বিস্মিত হয়েছি। কারন, শুধু ছিনতাইয়ের জন্য রাজিবকে হত্যা করা হয়নি। এটা পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। নিখোঁজ হওয়ার সময় রাজিবের নিকট ছিলো মাত্র পঁচিশ টাকা। ২০ হাজার টাকা তো দুরের কথা, তার নিকট ১০০ টাকাও ছিলনা। আর ওর নিকট ছিল রিদমি নোট ১০ মডেল অ্যান্ডুয়েড সেট। যার বাজার মুল্য ১৮ হাজার টাকা।

 

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেকে বিকাশ হ্যাকার, মাদক সেবি ও মাদক ব্যবসায়ি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কিন্তু আমার ছেলে যে দুইটা মোবাইল সিম ব্যবহার করত সে দুইটা সিম পুলিশ নতুন করে উত্তলন করে নিয়েছেন । সিম দুইটাতে এখন পর্যন্ত বিকাশ কিংবা ইমু অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। তাহলে কিভাবে সে বিকাশে টাকা হ্যাক করল ? আমার ছেলে ঢাকা থেকে আসার পর স্থানীয় নাজমুলের ছেলে মানিকের দোকান এবং ওই মোড়েই (দোয়াড়া মোড়) জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি তছিকুল ইসলাম নিয়ন্ত্রিত অফিসে উঠাবসা করত । এর বাইরে সে অন্য কোথাও যেতনা । আটককৃতরা যদি পুলিশের নিকট এমন জবানবন্দি দিয়ে থাকেন তাহলে সে জবানবন্দিতে তারা প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ে পুলিশ কে আরও বেশি দায়িত্বপুর্ন হতে হতো। পাশাপশি কতিপয় চক্রান্তকারি ব্যক্তি গনমাধ্যম কর্মিদের ভূল তথ্য দিয়ে বিষয়টাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। সাংবাদিকগন, নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে বিষয়টি অনুসন্ধান করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। এছাড়াও স্থানীয়দের জিঙ্গাসা করলেও জানা যাবে, আমার ছেলে রাজিব হ্যাকার, কিংবা মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলো কিনা। কেউ বলতে পারবেনা আমার রাজিব এগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। অথচ, একটি হত্যাকান্ডের মুল ঘটনা কে সম্পুর্ন আড়াল করে মনগড়া ভিত্তিহীন ঘটনার জন্ম দেয়া হচ্ছে। এতে করে হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাবে ও আসল অপরাধিরা রক্ষা পাবে । ময়না তদন্তের রিপোর্টে শরীরে বেশ কয়েকটি গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। যা পূর্বপরিকল্পিত ও প্রতিহিংসামূলক হত্যাকান্ড বলেই প্রমানিত। কিন্তু, হত্যাকান্ড নিয়ে প্রকাশিত বক্তব্যের অসামঞ্জস্যতা এবং অন্যান্য কারণ শুধু পরিবার নয়, জনমনেও নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। হত্যাকান্ডের প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও পুলিশ নেপথ্যে থাকা কিলার চক্রের সন্ধান না পাওয়ায় আমাদের পরিবারের মধ্যে যেমন করে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তেমনি নির্বিঘ্নে ভবিষ্যৎ চলাফেরার জন্যে সৃষ্টি হয়েছে আতংক।তাই আমাদের দাবি, হত্যার আসল রহস্য বের করে জড়িতদের সনাক্ত করতে হবে।

 

নিহত রাজিবের দুলাভাই কাউসার হোসেন বলেন, রাজিব যখন বাসা থেকে বের হয় তখন বলেছিলো, এক সিনিয়র (বড়) ভাই ডাকছে দ্রুত যেতে হবে। ওই বড় ভাই কে সেটার সন্ধান এখনও পাইনি পুলিশ। তাছাড়া রাজিবের নিকট টাকা নিয়ে যে মিথ্যাচার করা হচ্ছে, তার প্রমান গ্রেপ্তারকৃত তিনজনের ভিন্নরুপ বক্তব্য। এদের একজন (সবুজ) বলেছেন, টাকা রাজিবের নিকট পেয়েছি। আর অপর দুজন বলেছেন, সবুজের পকেটে থাকা টাকা আমাদের ভাগ করে দিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, কে এই বড়ভাই? তাদের নিকট ২০ হাজার টাকা আসল কিভাবে এবং ওই টাকা কার? পুলিশ প্রশাসনের নিকট আমাদের দাবি, আপনারা এই অমিমাংসিত প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে নিরপেক্ষভাবে সঠিক তদন্ত করুন। হত্যার আড়ালে থাকা আসল খুনিদের সনাক্ত করুন এবং রাজিবের নিকট থাকা ফোনটি দ্রুত উদ্ধার করুন। এটাই আমাদের প্রার্থনা।

 

এ বিষয়ে রাজিব হত্যা মামলার তদন্তকারী অফিসার (আইও) বাঘা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) তৈয়ব আলি বলেন, রাজিব বিকাশ হ্যাকার, মাদক সেবি কিংবা ব্যবসায়ী ছিল এধরনের কোন তথ্য আমরা এখনও পাইনাই। এ ধরনের কোন মন্তব্যও পুলিশের পক্ষ থেকে কাওকে দেয়া হয়নি। যদি কেউ এ ধরনের বক্তব্য বা মন্তব্য প্রচার করে থাকেন, তাহলে তা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। ২০ হাজার টাকা কার এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টাকা কার এটা এখনও আমরা সনাক্ত করতে পারিনাই। ধারনা করা হচ্ছে তৃতীয় কোন মাধ্যম টাকাটা দিয়ে থাকতে পারে। তবে আশা করছি খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সকল রহস্য উদঘাটনপূর্বক হত্যাকান্ডে জড়িত সকল আসামীকে গ্রেপ্তার করা হবে।

 

এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ইতমধ্যেই হত্যাকান্ডের ঘটনায় তিনজনকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতের সোর্পদ করা হয়েছে । মামলা তদন্তা‌ধিন রয়েছে। জড়িত কেউ পার পাবেনা।

 

প্রসঙ্গত গত ৬ জুলাই (বুধবার) দুপুরের খাবার খেয়ে ৪ টার দিকে রাজিব বাসা থেকে বের হয় । এরপর সে আর বাসায় না ফেরায় পরদিন বৃহষ্পতিবার (৭ জুলাই) রাজিবের বোন চায়না খাতুন থানায় জিডি করেন। জিডির পরদিন শুক্রবার (জুলাই) সকালে পদ্মা নদীর কিনার থেকে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়।বিডি নিউজ২৩ 

সংবাদটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

Recent Comments

No comments to show.