হাবিল উদ্দিন, রাজশাহীঃ রাজশাহী রামচন্দ্রপুর বাসার রোড এলাকার শতবর্ষী পুকুর ভরাট বন্ধে মানববন্ধন করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে বারটায় রাজশাহী সাহেব বাজার এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী বলেন, আমাদের এলাকার বিহারী বাবুর পুকুরটি প্রায় শতবর্ষের পুরোনো। শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত এই পুকুরটি আমাদের প্রাণপ্রিয়। শতশত মানুষের গোসল, কাপড়-চোপড় ধোয়াসহ পানিকেন্দ্রিক নিত্য কাজ এই পানিতে সম্পন্ন হয়। সারা বছর এই পুকুরে পানির প্রবাহ থাকায় অগ্নিকান্ড ঘটলে ফায়ার সার্ভিস এখান থেকে পানি ব্যবহার করে। পুকুরটি সরকারি ভূমি রেকর্ডে চিহ্নিত।
গত ৭ জুলাই বৃহস্পতিবার প্রকাশ্য দিবালোকে মালিকপক্ষ এবং তাঁর লোকজন ৪/৫টি বালু ভর্তি ট্রাক নিয়ে এসে পুকুরটি ভরাট শুরু করে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে তাদের ভরাট বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। এক পর্যায়ে প্রচন্ড বাধার মুখে তারা সেখান থেকে চলে যায়।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ধারা-৬ (ঙ) অনুযায়ী যে কোন ধরনের জলাধার বা পুকুর ভরাট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ-যা একই আইনের ধারা-১৫ (১) এর ক্রমিক ৮ অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। অপরদিকে জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ এর ৩৬ ধারা অনুযায়ী কোন পুকুর/জলাশয় ইত্যাদি ভরাট করা বে-আইনী । এই আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণীও পরিবর্তন করা যাবে না। এইসব আইন কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতার দাপট ও অর্থবিত্তের জোরে নগরীতে একটার পর একটা পুকুর ভরাট করেই চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিহারী বাবুর পুকুরটিও ভরাটের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ফলে আমরা রাজশাহীবাসী প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় হুমকির মধ্যে আছি।
উল্লেখ্য,বেশ কয়েক বছর আগে আরেকবার এই পুকুর ভরাট করার চেষ্টা করা হয়েছিল।সেবারেও এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে করতে পারেনি।একজন এলাকাবাসী মামলাও করেছিলেন।
এলাকাবাসীরা আরো বলেন, এমনিতেই রাজশাহীর পানি আশংকাজনক হারে নিচে নেমে যাচ্ছে।তাছাড়া অতি খরাপ্রবণ এলাকা এবং মরুকরণের হাত থেকে রাজশাহকে রক্ষা করতে হলে নগরীর হাতে গোনা যে কয়েকটি পুকুর আছে তা অতি দ্রুত নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে সংরক্ষণসহ ভরাট বন্ধের জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে এলাকাবাসি আজ মানববন্ধন শেষে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রকে সরাসরি একটি আবেদনপত্র দাখিল করেন।আবেদন পত্রের অনিলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভাগীয় কমিশনার,জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং আরডিএ’র চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করা হয়।