রাজশাহীর বাগমারায় ১৫ হত্যা মামলার আসামি, কমিউনিস্ট পার্টির ভয়কংর কিলার “আর্ট বাবু” এবার তিনিই হলেন উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক!..More
রাজশাহীর, বাগমারা উপজেলার, তাহেরপুর পৌরসভার প্রথম মেয়র আলো খন্দকারসহ ১৫ জনকে গলা কেটে হত্যা মামলার আসামি আবদুর রাজ্জাক সরকার ওরফে আর্ট বাবু। সেই আর্ট বাবু গতবার উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। বিএনপির রাজনীতি করা ‘সরকার পরিবার’ থেকে উঠে আসা আর্ট বাবু তার নির্বাচনী পোস্টারে ব্যবহার করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের ছবি। তবে দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি।
পৌরসভা নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেলেও উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন আত্মস্বীকৃত সর্বহারা ক্যাডার আর্ট বাবু। ১৫ জুলাই বাগমারা উপজেলা আওয়ামী কৃষক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ভবানীগঞ্জ নিউ মার্কেট মিলনায়নে। সম্মেলনে মহসিন আলীকে সভাপতি ও আবদুর রাজ্জাক বাবু ওরফে আর্ট বাবুকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়।
আর্ট বাবুকে দলীয় পদে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা জানান, আর্ট বাবু তাহেরপুর পৌরসভার প্রথম মেয়র আলো খন্দকারকে তাহেরপুর কালিমন্দিরের সামনে শতশত লোকের সামনে জবাই করে হত্যা করে। নব্বই দশকে তার মদদে হত্যা করা হয় অন্তত ১৫ জনকে। এ সমস্ত হত্যা মামলার প্রধান আসামি আর্ট বাবু। একাধিক হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাবাস শেষে এলাকায় ফেরেন স্থানীয় এমপির ছত্রছায়ায়।
আবদুর রাজ্জাক বাবু ওরফে আর্ট বাবু বলেন, ‘সাংবাদিকদের কাছে আমার সব তথ্য আছে। বর্তমানে আমার নামে কোনো মামলা নেই। ’
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল সরকারের কাছে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনটি তার ব্যক্তিগত সহকারী রিসিভি করেন। তিনি বলেন, ‘স্যার অসুস্থ কথা বলতে পারবেন না। ’ সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা জানান, তিনি আজই জেনেছেন সর্বহারা করতেন এমন একজনকে কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেবেন।
তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিএনপির রাজনীতি করা পরিবারের সন্তান আর্ট বাবু। আমার শ্বশুর আওয়ামী লীগ নেতা আলো খন্দকারসহ অন্তত ১৫ জনকে হত্যা করেছে সে। এর মধ্যে ৫টি হত্যা মামলা রাজশাহীর আদালতে চলমান। বেশকিছু মামলা আছে আত্রাই, রানীনগর, নওগাঁ, নাটোরসহ বিভিন্ন থানায়। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য পাবনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এমপি এনামুল হক তাকে এনে দলের পদ দিয়েছে। এতে করে আওয়ামী লীগ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হলো। তিনি বলেন, ‘আর্ট বাবু কারও ভোট চাইতে গেলে, মানুষ তাকে ভোট দেবে? একজন সর্বহারার কথায় মানুষ ভোট দেয়?
তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনসুর রহমান মৃধা বলেন, আর্ট বাবু সর্বহারা ক্যাডার। সবাই তাকে কিলার আর্ট বাবু নামে চেনে। তার নামে বহু মামলা। এভাবে তাকে পদ দেওয়ায় আওয়ামী লীগের ক্ষতি হয়েছে। তবে ভয়ে কিছু বলতে পারছে না মানুষ। গত সংসদ নির্বাচনের সময় এলাকায় এসেই যুবলীগ নেতা চঞ্চল কুমারকে হত্যা করে বাবু। এই মামলা এখনও চলছে। এমপি এনামুল হকের ক্ষমতাতেই এসব করছে সে।
এসব বিষয়ে এমপি এনামুল হক বলেন, ‘কৃষক লীগের নেতারাই কৃষক লীগের নেতা বানাবে। আমি কিভাবে করবো। (সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন)