বিডি নিউজ২৩ঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় সালিশি সভায় বাকবিতণ্ডার জেরে বল্লমের আঘাতে শাহ আলম (৩৫) নামে এক ফার্নিচার ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। রোববার (১৭ জুলাই) ভোরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাহ আলম উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের মৃত মালেক সরদারের ছেলে।
নিহতের চাচাতো ভাই কামাল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার স্থানীয় জাহের মিয়ার ছেলে বাহার মিয়া ও সফর মিয়ার ছেলে আরাফাতের মধ্যে ঝগড়া হয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে এলাকার জাহের মিয়ার উঠানে সালিশি সভা হয়। সালিশে জিয়া নামে একজন না আসায়, সভায় উপস্থিত শাহ আলম এর কারণ জিজ্ঞাস করেন।
এনিয়ে সফর মিয়া, সাঈদুল, ছুট্রু ও আরাফাতের সঙ্গে শাহ আলমের বাগবিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্রসহ শাহ আলমের ওপর হামলা করেন। এ সময় তার একটি চোখে বল্লমের আঘাত লাগে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শহরের নিউ ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে মধ্যরাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হলে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনি মারা যান।
নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পাওয়ার পর রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।
আরো খবর দেখুন…
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশুটি সুস্থ আছে
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশুটি সুস্থ আছে। তবে অনেকেই শিশুটির দায়িত্ব নিতে চাইলেও তার বেঁচে থাকা অপর দুই ভাই-বোনের খোঁজ কেউ নেয়নি। এতে বাবা-মা হারানো তিন শিশুরই ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। বেঁচে যাওয়া ওই নবজাতক মহানগরীর পাড়া লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। রোববার (১৭ জুলাই) সকালে লাবিব হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান মিয়া জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নিহত জাহাঙ্গীর আলম আমার প্রতিবেশী। তার বাবা-মা প্রতিবন্ধী। জাহাঙ্গীর আলমের আগের তিন সন্তানের মধ্যে একজন সানজিদা মারা গেছে। অপর দুজন ছেলে এবাদত মিয়া (৮) ও মেয়ে জান্নাত আক্তার (১০)। ছেলেটা কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। এখন এই নবজাতকসহ তারা তিন ভাই-বোন হলো। তাদের দাদা দাদি দুজনই প্রতিবন্ধী হওয়ায় ওই তিন শিশুর দেখাশুনা এমনকি ভরণপোষণ যোগানোর কেউ নেই। সবাই নবজাতকের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। তিনি বলেন, অনেক মানুষ নবজাতকের দায়িত্ব নিতে চায়। কিন্তু অন্য দুই ভাই-বোনের খবর এখন পর্যন্ত কেউ নেয়নি। আমরা আশাবাদী, শুধু নবজাতক নয় তিনজনের দায়িত্বই প্রশাসন নেবে।
শনিবার (১৬ জুন) রাত ৯টার দিকে লাবিব হাসপাতালে ওই নবজাতকের খোঁজখবর নিতে যান জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক।
তিনি বলেন, আমি ওই বাচ্চাটিকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাাম। বাচ্চার চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব ও ভবিষ্যতে যেন তার কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তার নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট করে দেওয়া হবে।
ওই দিন দুপুরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের ফকির বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) ও মেয়ে সানজিদাকে (৬) নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। পৌর শহরের খান ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম ও স্ত্রী রত্না বেগম মারা যান এবং মেয়ে সানজিদা আক্তার গুরুতর আহত হয়। এ সময় ট্রাকচাপায় রত্না বেগমের পেট ফেটে কন্যা শিশুর জন্ম হয়।
পরে আহত সানজিদা ও নবজাতককে নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করে নবজাতককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তবে অতিরিক্ত যানজটের কারণে নবজাতককে চুরখাই কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।