বিডি নিউজ২৩: শুধু যে লোডশেডিং তা নয়, সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যাপক হারে মশার উপদ্রব। বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ যেন রাজশাহীবাসীর জন্য সোনার হরিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লোডশেডিং এর এমন অবস্থা স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীরা একটি ফোন পুরোপুরি চার্জ দেওয়ার আগেই বিদ্যুৎ যেন বিদ্যুৎ গতিতে চলে যাচ্ছে। যাদের বাসায় ছোট বাচ্চা কিংবা অসুস্থ রোগী রয়েছেন তারা পড়ছেন চরম বেকাদায়। রাজশাহীতে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ১ জুলাই থেকে এই অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। আধাঘণ্টা পর পর লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিলছে। পুরো জেলায়ই চলছে বিদ্যুতের এমন সঙ্কট।
রাজশাহীর সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে। শহরের চেয়ে গ্রামে এ সঙ্কট আরো বেশি।
রাজশাহী মহানগর ছাড়াও বিভাগের আট জেলাতেই কয়েক দিন ধরে চাহিদামতো বিদ্যুতের সরবরাহ করতে পারছে না নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো)।
লোডশেডিংয়ের কারণে অফিস-আদালতের কার্যক্রম পরিচালনায় চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। জেনারেটর, আইপিএস ও ইউপিএস দিয়ে অফিস, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, দোকানপাট ও বাসাবাড়ি স্বাভাবিকভাবে চালানো যাচ্ছে না। পচতে শুরু করেছে বাড়ির ফ্রিজের মাছ-গোশত, শাক-সবজি ও ফলমূল।
ব্যবসায়ীরা জানান, রাজশাহীতে এমন বিদ্যুৎ সঙ্কট এর আগে কখনো দেখেননি তারা।
বিদ্যুৎ না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ লিখেছেন, ‘বিদ্যুৎ এখন আর যায় না, মাঝে মাঝে আসে।
নগরবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুতের সমস্যা নিয়ে জানতে নেসকোর হটলাইনে ফোন করা হলেও তা রিসিভ করে না কেউ। শহর কন্ট্রোল রুম ও একমাত্র অভিযোগ কেন্দ্রের ফোনটি এখন প্রায় সবসময়ই তুলে রাখা হচ্ছে।
শুধু শহর নয় প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় জুড়েও বেশিক্ষণ থাকছে না কারেন্ট। দিনে দু-একবার কারেন্টের দেখা মিললেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হচ্ছে না। রাতের অবস্থা আরো ভয়াবহ। সবচেয়ে বেশি স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারী ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা পড়েছেন মহা বিপদে, বিদ্যুৎ না থাকায় কম্পিউটার যেন একেবারে অকেজ অবস্থায় পড়ে থাকছে। কোন কাজে যেন স্বাভাবিকভাবে করা যাচ্ছে না এই বিদ্যুতের কারণে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে খুব ঝাড়ছেন সাধারণ মানুষেরা।
বিদ্যুৎ সঙ্কট নিয়ে নেসকো রাজশাহী বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো: আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহীর একার নয়, লোডশেডিং এখন জাতীয় সমস্যা। জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদামতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তাদেরকে বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, রাজশাহীর জন্য চাহিদা ৪৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু সরবরাহ মিলছে এর অর্ধেক। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ ৩০ মিনিট অন ও ৩০ মিনিট অফ রাখতে হচ্ছে। সে হিসেবে দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকছে। সমস্যা কী সেটা আমরাও জানি না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের জানাতে পারেননি। তাই কবে সমস্যার সমাধান হবে সেটাও বলতে পারছি না