বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার কোটি টাকায় নির্মিত ড্রেন সমোঝতার মাধ্যমে মাত্র এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রচার প্রচারণা চালিয়ে নিলাম করার কথা থাকলেও আগের দিন বিকেলে ২০ মিনিটের মাইকিং করে পরদিন সোমবার( ২০ জুন ) সকাল ১১ টায় তড়িৎ গতিতে ওই নিলাম ডাকের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এ নিয়ে আবারও আলোচনায় পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক।
সংশ্লিষ্ঠরা জানান, ২০১০ সালে ও পরবর্তি ২০১৭ সালে বাঘা বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে পূর্বদিকে বাংলা লিংক টাওয়ার পর্যন্ত প্রায় এক কি:মি: ড্রেন নির্মান করেন তৎকালীন মেয়র আক্কাছ আলী। যার নির্মান ব্যয় ছিল প্রায় ১ কোটি টাকা। বর্তমানে বানেশ্বর টু ঈশ্বরদী সড়ক প্রশ্বস্ত করনের কারনে উক্ত ড্রেন ভেঙ্গে ফেলতে হচ্ছে। ফলে পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক (সোমবার) সকাল ১১ টায় উন্মুক্ত নিলাম ডাকের ঘোষনা দেন। নিলাম ডাকের সরকারি সর্ব নিম্ন মূল্য নির্ধারন করা হয়েছিলো ৫ লক্ষ টাকা। উক্ত নিলাম ডাকে অংশগ্রহন করেন ৩৪ জন । কিন্তু ড্রেনটি সমঝোতার মাধ্যমে পৌর মেয়র রাজ্জাকের সমর্থিত ঠিকাদার ছাত্রদল নেতা(সাবেক) বাঘা পৌর বিএনপির আহব্বায়ক সদস্য শাহিন মন্ডল কে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নিলাম সম্পন্নের আগে ব্যাপক আকারে প্রচার প্রচারনা করার নিয়ম থাকলেও সুবিধা অর্জনের জন্য তা করা হয়নি। তার পরেও ৩৪ জন নিলাম ডাকে অংশগ্রহন করে। অনেকে নগদ ৬/৭ লক্ষ টাকায় নিলামে নিতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু স্বতস্ফুর্ত ডাকে অংশগ্রহনে বাধা দিয়ে মেয়রের মনোনিত ঠিকাদার শাহিন মন্ডলকে দেয়া হয়েছে। মূলত নিলাম ডাকে অংশগ্রহনকারী সকলের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে ড্রেনটির নিলাম কার্য সম্পুর্ন হয়েছে। এতে করে নিলাম ডাকে অংশগ্রহনকারী সকলেই দুই হাজার দুইশত (২২০০) করে টাকা পেয়েছে। নিলাম টি এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।
তবে ক্রেতাকে গুনতে হয়েছে দুই লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার টাকা। এত সরকার ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বঞ্চিত হলো। তাদের অভিমত,এই নিলাম ডাকের মাধ্যমে সরকার প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য সচিব রবিউল ইসলাম কে কল করলে তিনি বলেন, নিলাম বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই । তাছাড়া আমি কোন তথ্য দিতে পারবোনা। আপনি ইঞ্জিনিয়ার কে অথবা মেয়রকে ফোন দেন।
এ বিষয়ে পৌরসভার প্রকৌশলী নাজমুল হাসানকে সোমবার একটার দিকে মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন নিলাম ডাকের প্রক্রিয়া চলমান। আপনি ১০ মিনিটি পরে ফোন দেন। এরপর তাঁকে ২টা থেকে বারংবার কল করলেও তিনি ৪টার দিকে কল রিসিভ করে বলেন, নিলাম ডাকের ফাইলপত্র হিসাব রক্ষকের নিকট আছে। আপনি উনাকে ফোন দেন বলেই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
পৌরসভার হিসাব রক্ষক হাসান আলী কে কল করলে তিনি বলেন,পৌরসভার কোন তথ্য দেয়া নিষেধ আছে। আমি দিতে পারবনা। আপনার কিছু জানার থাকলে মেয়র (স্যার)কে ফোন দেন বলেই তিনিও সংযোগটি কেটে দেন।
এ বিষয়ে ক্রেতা শাহিন মন্ডলকে একাধিকবার কল করলেও কলটি রিসিভ হয়নি।
নিলাম ডাক বিষয়ে বক্তব্য নেবার জন্য মেয়রের ব্যবহৃত (০১৭…০৪ ) নাম্বারে কল করে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বক্তব্য নেবার জন্য পৌরসভায় গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি।