বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় ঠিকাদার ও সাং seeবাদিক উভয়ের পক্ষ থেকে একে-অপরের বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ ও জিডি করা হয়েছে।
জানা যায়,বাঘা উপজেলার হরিনা এলাকায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে একটি রাস্তা নির্মানের ছবি ও ভিডিও ধারণ করার কারনে ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস সরকার ওই সাংবাদিককে অশ্লীল ভাষায় ফোনে ও প্রকাশ্যে গালি-গালাজসহ প্রাণ-নাশের হুমকি প্রদান করা হয়।এ ঘটনায় আখতার রহমানের পক্ষ থেকে ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে গত (২৬ মে) বৃহষ্প্রতিবার বাঘা থানায় একটি সাধারণ ডাইরি (জি.ডি) করা হয়। এরপর উভয় পক্ষ থেকেও পুনরায় একে-অপরের বিরুদ্ধে পৃথক আরো দু’টি অভিযোগ দায়ের করা হয় ।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক আখতার রহমান বাঘা থানায় ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে জিডি করার পর ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস সরকার শুক্রবার(২৭মে)রাতে আখতার রহমানের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগ করা হয়। এরপর গত (২৯ মে) সকালে তার লোকজন নিয়ে নারী-পুরুষের সমন্বয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ঝাড়ু– মিছিল বের করা হয় ।
এ ঘটনায় স্থানীয় বাঘা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা ওইদিন বিকেলে তাদের নিজ কার্যালয়ে এক জরুরী সভা আহবান করা হয়। ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস সরকারের এ কর্মকান্ডে তীব্র নিন্দা ও তার দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে পৃথক একটি মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আব্দুল কুদ্দুস সরকার বাঘা পৌর আ’লীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে নিজেকে অনেক প্রভাবশালী মনে করেন। তার ঠিকাদারি কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি রয়েছে। আর এ সকল দুর্নীতির খবর প্রকাশ করতে গেলে তার পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিছিল করা হয় ।
এদিকে স্থানীয় সাংবাদিকদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত-৩১ মে’ রাতে আখতার রহমানর পক্ষ থেকে মানহানির অভিযোগ এনে বাঘা থানায়-ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস ও মিছিলে উপস্থিত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে একটি মানহানি মামলা দায়ের করা হয়।
এ বিষয়ে আব্দুল কুদ্দুস সরকার বলেন, গত-২৬ মে আমার নিকট পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন সাংবাদিক আখতার রহমান। অন্যথায় সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ করে আমার মানহানি করবে। তিনি আরও বলেন,অতীতেও তার বিরুদ্ধে ঠিকাদার ও বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। আমার একটি সাইডে কাজ চলছে। আমি সিডিউল অনুসারে কাজ করছি। হঠাৎ আখতার সাংবাদিক সেখানে গিয়ে ছবি তোলাসহ আমার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। আমি জানতে পেয়ে তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করি। তখন সে সরাসরি দেখা করে বিস্তারিত কথা বলতে চাই। পরে সে আমার সাথে দেখা করেন এবং কাজের বিভিন্ন ভুল ত্রুটির কথা উল্লেখ করে বলেন, আপনি অনেক বড় কাজ করছেন আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। নতুবা আমি নিউজ করলে আপানার মানহানি হবে কাজেও অনেক ঝামেলা হবে। এ সময় আমি টাকা দিতে রাজি না হলে সে অসন্তুষ্টি হয়ে আমার বিরুদ্ধে অসত্য নিউজ প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন,ইতি পুর্বে বাঘা মেডিকেলের এক ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা নেয়ার একটি অডিও ফেসবুকে শুনেছিলাম।
কোথাও কোন ঘটনা না জেনে না বুঝে ক্যামেরা বের করে ছবি তুলে পরে চাঁদা দাবি করেন বলে আখতার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমি তার বিচার চাই।।
বিষয়ে বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বলেন, ক্রয় সূত্রে উপজেলার হরিনা এলাকায় একটি রাস্তার কাজ করছেন আব্দুল কুদ্দুস সরকার। সেখানে পুরাতন ইট ব্যবহার করছিলো। পরে সরেজমিনে গিয়ে ইট অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আপাতত কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, উভয় পক্ষ থেকে পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ-সহ একটি সাধারণ ডায়েরি (জি.ডি) পেয়েছি। বিষয় গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।