কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে মেয়ের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জোরপূর্বক কাবিননামায় স্বাক্ষর করিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পান্টি বাজার এলাকায় নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী কুষ্টিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এ বছর অনার্স সম্পন্ন করেছে।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি তিতাশ (৪০) কুমারখালী উপজেলার পান্টি এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের নাতি ছেলে ও বরিশাল জেলার বাসিন্দা। বুধবার সকালে সরেজমিন গেলে ওই তরুণীর মা বলেন, স্থানীয় নেট ব্যবসায়ী রোমান ও লাহোরী ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিতাশসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে পাকা ও দেওয়ালে ঘেরা বাড়ির পেছন দরজা দিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, দা, ডাসা, দড়ি ছিল। তারা এসেই আমাকে বলে তোর মেয়েকে তিতাশের সাথে বিয়ে দিতে হবে। না হলে মেরে ফেলে হবে। বিয়েতে রাজি না হলে ওরা প্রথমে আমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মেয়ের কক্ষে নিয়ে যায়। পরে মেয়ের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কাবিননামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, এ বিয়ে আমরা মানি না। কিন্তু আমরা খুব ভয়ে আছি। ওই কলেজছাত্রী বলেন, প্রায় ৬ বছর আগে থেকেই তিতাশ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ওই দিন রাতে হঠাৎ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে বিয়ের কথা বলে। মাকে বেঁধে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এক পর্যায়ে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। যে কারণে বাধ্য হয়ে ভয়ে কাবিননামায় স্বাক্ষর করেছি। স্বাক্ষর নেয়ার পর তারা চলে যায়।
ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া রায়হান উদ্দিন জানান, দোকান বন্ধ করে রাত ১০টার দিকে বাসায় ফিরি। সে সময় রোমান, লাহোরীসহ কয়েকজন তাকে ডাক দেয়। বাইরে আসা মাত্রই মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে একটি রুমে আটকে রাখে। পরে জানতে পারি অস্ত্র ঠেকিয়ে বিয়ে করে চলে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে রোমান ও লাহোরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পান্টি এলাকার পপি সুপার মার্কেটে যাওয়া হয়। গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাদের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযুক্ত তিতাশকে কল করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।