মোহাম্মদ ইমাম হোসাইন: চিফ এডিটরঃ বিডি নিউজ২৩/BD News23: বিসিএস ক্যাডার দুই ভাই ছুটিতে এসেছিলেন বাসায়। অযথাই বসে না থেকে বাবা ফুটপাতের মিষ্টির দোকানে কাজে সহায়তা করেছিলেন। তারা যদি ফুটপাতে বাবার দোকানে সহায়তা করে তা অবশ্যই খুব সহজেই, মানুষের নজরে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার, আড়ানী পৌরসভার চাউলের হাটের ফুটপাতে অমিত কুমার পাল ও মৃণাল কুমার পাল মিঠুন, পিতার ফুটপাতের দোকানে বসে মিষ্টি বিক্রি করতে দেখা গেছে বিসিএস ক্যাডার এই দুই ভাইকে।
এদিকে জানা যায় যে, আড়ানী উচ্চ বিদ্যালয় ও ডিগ্রি কলেজে থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর অমিত কুমার পাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। পরে তিনি ৩৫ তম বিসিএস পরীক্ষায় পাশ করে সান্তাহার সরকারি কলেজে যোগদান করেন। এছাড়াও অমিত কুমার পাল ১৬৪ তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার চার মাস মেয়াদে বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ, করে দেশ সেরা চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
এছাড়াও মৃনাল কুমার পাল মিঠন, এমবিবিএস ডাক্তারি পড়াশোনা শেষ করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।
এছাড়াও আরও জানা যায় যে তারা হলেন, বাঘা উপজেলার, আড়ানী পৌরসভার ক্ষুদ্র মিষ্টি ব্যবসায়ী, বাবু উত্তম কুমার পাল ও বাসনা রানী পালের ছেলে। বাবু উত্তম কুমার পাল তিনি উপজেলার আড়ানী পৌর সভার মিষ্টি বিক্রেতা এবং মা বাসনা রানী তিনি একজন গৃহিনী।
দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা অমিত কুমার পাল বলেন, আমি ৩৫তম বিসিএস শিক্ষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একটি কলেজে যোগদান করেছি। আমার বাবা আমাদের দুই ভাই এক বোন কে মানুষ করতে অনেক কষ্ট করেছে। এখনো আমার বাবা কষ্ট করেই যাচ্ছেন। আমরা বিসিএস ক্যাডার হয়েছি কিন্তু আমাদের কাছে কোনো কাজই ছোট নয়। আমরা কাজকে মূল্যায়ন করি এবং সুযোগ পেলেই আমার বাবার এই ছোট্ট দোকানে বসে বাবাকে সহায়তা করে।
এদিকে একই বিষয়ে আরেক ভাই মৃনাল কুমার পাল মিঠন বলেন, বাড়িতে ছুটিতে এসেছি, তাছাড়া বাবার দোকানে প্রচন্ড ভিড় হয়, তার ওপর রমজান মাস, সেজন্য বাসায় বসে না থেকে বাবার ক্ষুদ্র এই মিষ্টির দোকানে তাকে আমরা সহায়তা করি। আমরাতো এই ক্ষুদ্র মিষ্টির দোকানের আয়-রোজগার দিয়েই বড় হয়েছি। এছাড়াও বাবার মিষ্টির দোকানে মানুষদের খুব দ্রুত জিনিস পাতি দিয়ে বিদায় করতে পারি। এভাবেই বলছিলেন দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা বিসিএস ক্যাডার দুই ভাই।
এসব বিষয় নিয়ে পিতা বাবু উত্তম কুমার পাল বলেন, আমার ছেলে দুটো এবং মেয়েকে কখনোই উন্নত খাবার উন্নত জামাকাপড় এবং উন্নত বাসস্থান দিতে পারেনি। আমার মনের ভিতর একটা কষ্ট থেকে গিয়েছিল পরে যখন তারা বিসিএস ক্যাডার হয়ে চাকরিতে যোগদান করেন তারপর একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলাম।
দুবাই বিসিএস ক্যাডার বিষয়টি অনলাইন সহ বিভিন্ন পেপার-পত্রিকায় যখন ব্যাপকভাবে প্রচার হয়, তারপরেই সারাদেশে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে পড়ে। ঘটনাটি ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। প্রধানমন্ত্রী নিজে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলমকে ফোন করে ওই দোকানের মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কাজকে মূল্যায়ন করায় ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলমকে তাদের দুই ভাইকে পুরস্কৃত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে দিয়েছেন।
স্থানীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম এই বিষয়টি তার ব্যক্তিগত ফেইসবুকের মাধ্যমে নিশ্চিত করে একটি পোস্ট করেছেন।