মোগো আবার কীসের ঈদ, মাইয়ারে ডাক্তারই দেখাইতে পারিনি

বিডি নিউজ২৩/BD News23: বিরল রোগে ভুগছে ঝালকাঠি সদরের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম আক্তার (১১)। তার বুকে মাকড়সাসদৃশ একটি আকৃতি তৈরি হয়েছে। এটি ধীরে ধীরে বুকের গভীরে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা এ রোগের কোনো নাম বলতে পারছেন না। তারা এটি অস্ত্রোপচার করে অপসারণের পরামর্শ দিয়েছেন। তবে রিকশাচালক বাবার পক্ষে মরিয়মের চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না।

মরিয়ম আক্তার শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কলাবাগান এলাকার সৈয়দ হালিমা মোয়াজ্জেম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। বাবা রহিম হোসেন পাডেলচালিত রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। মা নুপুর বেগম একজন গৃহিণী। এ দম্পতির জান্নাতি আক্তার (৯) ও আলিফা (দেড় বছর) নামে আরও দুই সন্তান আছে। জান্নাতি দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

মা নুপুর বেগম জানান, ৫-৬ বছর আগে মরিয়মের বুকের ওপর মাকড়সার মতো দেখা যায়। তখন থেকেই এক এক করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সব চিকিৎসক দেখানো হয়। তাতে কোনো উপকার না পাওয়ায় সার্জারি চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। মরিয়মকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কর্মকারকে দেখান।

তার তত্ত্বাবধানে ছয় মাস চিকিৎসা চলে। তিনি অনেক ধরনের ওষুধ ও মলম ব্যবহার করতে দেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি। পরে ঢাকার চিকিৎসককে দেখালে তিনি অস্ত্রোপচার করানোর পরামর্শ দেন।

নুপুর বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্কুল-সংলগ্ন ছোট একটি ঘরে ভাড়া থাকি। স্বামী রিকশা চালিয়ে যা পান তাতে কোনো রকম সংসার চলে। স্বামীর বাড়িতেও কোনো জমিজমা নেই। দিন আনি, দিন খাই। আমাদের খেয়ে বেঁচে থাকাই কষ্টের, সেখানে অপারেশন করানোর এত টাকা কোথায় পাবো?’

‘সামনে ঈদ, ছোট ছোট বাচ্চা। ওরাও নতুন কাপড়ের জন্য কান্নাকাটি করে। কিন্তু কী করবো। মাইয়াডারেই তো ডাক্তার দেখাতে পারি না, ঈদ পালন করমু কীভাবে’, প্রশ্ন রাখ্নে নুপুর বেগম। সৈয়দ হালিমা মোয়াজ্জেম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সায়মা মনি জানান, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম আক্তার বিরল রোগে ভুগছে। তার বুকের মাঝখানে একটি মাকড়সার মতো হয়েছে, যা বুকের ভেতর শিকর তৈরি করে ছড়িয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসক রোগের কোনো নাম বলতে পারছেন না। এটি দ্রুত অপসারণ করা দরকার। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, রোজার মাসে আমরা অনেকে জাকাত দিই। যদি মেয়েটিকে বাঁচানোর জন্য সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই, তাহলে সবার বিন্দু বিন্দু সাহায্যে মেয়েটির চিকিৎসা করা সম্ভব। বিডি নিউজ২৩/BD News23

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *