বিডি নিউজ২৩/BD News23: আপনি যখন আপনার সন্তানের গায়ে হাত তুলেন, তাদের ঝাঁকুনি দিয়ে কথা বলেন বা এমন কিছু করেন যা তাদের শরীরে একটি চিহ্ন রেখে যায়, এটি কে বলে শারীরিক নির্যাতন।
আপনি যখন তাদের উপহাস করেন কারণ তারা কাঁদছে,কোন একটা কাজ করতে পারছে না, কোন কিছুতে ভয় পাচ্ছে অথবা অন্য কেউ তাদের উপহাস করছে বা আপনি মুখ ভেংচি দিচ্ছেন বা তা নিয়ে হাসহাসি করছেন, এটি মানসিকভাবে নির্যাতন।
আপনি যখন তাদের বিকৃত নামে ডাকেন বা তাদের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে মজা করেন (যেমন গাধা নাকি নাকি তুমি বুঝ না, কিংবা কোন পশুর নামে গালি) এটি মৌখিকভাবে অপমান করা বা নির্যাতন। যখন আপনি তাদের অবাধ্যতার জন্য পরবর্তীতে কঠোর এবং ভয়ঙ্কর শাস্তির হুমকি দেন, এটি আধ্যাত্মিকভাবে অপমান বা নির্যাতন।
শিশু নির্যাতন কুৎসিত এবং এটি অনেক রকমের। কোন মা বাবা তাদের নিজের কর্মকে অবমাননাকর হিসাবে দেখেন না।, তবে আমরা যদি আমাদের পরিবারের সবচেয়ে দুর্বল সদস্যদের সাথে এমন আচরণ করি এবং তা কঠোরভাবে বিবেচনা করি তবে আমরা সম্ভবত আপত্তিজনক আচরণ বা এর খুব কাছাকাছি কিছু খুঁজে পাব।
শিশু জন্ম দেয়া ও তাদের লালন পালনে মাধ্যমে আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা হতে পারে, আমাদের ধৈর্য্যের শেষ সীমায় ঠেলে দিতে পারে, আমাদের চরম রাগিয়ে দিতে পারে এবং আমাদেরকে এমনভাবে উত্তেজিত করতে পারে যেটা খুব কম কাজেই হতে পারে। কিন্তু আমরা তাদের এই পৃথিবীতে নিয়ে এসেছি তার মানে এই নয় যে আমরা তাদের কাছে যা চাই তা করতে পারি এবং এটিকে ন্যায়সঙ্গত হিসেবে ধরে নিতে পারি! তারা সৃস্টি কর্তার অপরুপ নিদর্শন আপনার জীবনে এটা ভুলে গেলে চলবে না। এবং তিনি আমাদের প্রতিটি কথা, আমাদের প্রতিটি চেহারা এবং তাদের প্রতি আমাদের প্রতিটি কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন।
আমরা তাদের খাওয়াই, তাদের আশ্রয় দিই এবং স্কুলে পাঠাই, এটা ভেবে, যে আমরা যথেষ্ট করছি নিজেকে প্রতারিত করবেন না।সৃস্টি কর্তা সমস্ত জীবনের (আমাদের সহ) পালনকর্তা। আমরা কেবল একটি মাধ্যম, কিন্তু আমরা অবশ্যই তাদের রিজিকের উৎস নই।
তাদের যে কোন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করাও আমাদের কাজ। তাহলে আমরা কি ঠিক ভাবে তা করছি? তাদের ক্ষতির প্রথম উৎস, আমরা। আপনার যদি এংগার ম্যানেজমেন্টের সমস্যা থাকে সাহয্য নিন বিশেষজ্ঞের।
আপনার যদি সময় ম্যানেজমেন্টের সমস্যা থাকে তা নিজ দায়ীত্বে ঠিক করুন। আপনার যদি কথায় কথায় মুখ খারাপ কর, বুলি করে কথা বলার অভ্যাস থাকে। অন্তত একজন মানুষও যদি আপনার সম্পর্কে এই মন্তব্য করে থাকে। তবে এখুনি নিজে শুধরে ফেলুন। আপনার এই মুখ দিয়ে প্রতিদিন কত মানুষ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে আপনি জানেন না। হয়তো সবাই বলে না।
সারাক্ষন আপনার কৃত কর্মের ফল নিজের ঘাড়ে না নিয়ে তা আপনার বাচ্চার ঘাড়ে বা অন্যের ঘাড়ে চাপানোর অভ্যেসটা আজকেই ছেড়ে দিন। (আমি অনেক মা কে দেখছি বিশেষত সিংগেল মায়েরা তাদের সন্তানদের কোন ভুল ত্রুটি হলে সেটা সেই বাচ্চার ঘাড়ে চাপানোর প্রবনতা) মনে রাখবেন বাচ্চাকে পৃথিবীতে আপনি আনতে চেয়েছেন। বাচ্চা নিজ ইচ্ছায় আসেনি।
বাচ্চাকে তার গায়ের রং, ওজন কম বা অতিরিক্ত ওজন, হাইট কম বা বেশি এসব নিয়ে নোংরা বুলি করা ছেড়ে দিন। বাচ্চা ইচছাকৃত ভাবে এগুলো ধারন করেনা। মা বাবা জেনেটিক থেকেই পায়। খাওয়ার অভ্যাসের কারনে শারীরিক গঠন হয়। যে অভ্যাস আপনারই তৈরি করা ।
সারাক্ষণ ধর্ম পরায়ান আপনি অথচ সন্তানের সাথে ব্যবহারের বেলায় কিরুপ ধারন করেছেন তা কি ভেবে দেখছেন? জোর জবরদস্তি, মারা পিটা, গালিগালাজ, চিৎকার। এটা কি কোন ধর্ম শিক্ষা দেয়? কখনওই না। মনিকা পারভীন প্রীতি, প্যারেন্ট এডুকেটর। বিডি নিউজ২৩/BD News23