বিডি নিউজ২৩/BD News23: শুধু কুমিল্লা বা ঢাকা রাজশাহী নাটোর নওগাঁ নয় সারা দেশের পাসপোর্ট অফিসে চিত্র প্রায় রকম। পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি দালাল সিন্ডিকেট এর অভিযোগ নতুন নয় বেশ আগে থেকেই ব্যাপক রকম সরগম ভাবে হয়ে আসছে। এবার নতুন করে যোগ হলো সেবাগ্রহীতা সহ সাংবাদিকদের উপর হামলা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার মতো ঘটনা। সংবাদকর্মীকে হেনস্থা করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিলেন কর্মকর্তা। কুমিল্লা পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি ও দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য পুরোনো হলেও এখন তা পৌঁছেছে চরম সীমায়। এমনই অভিযোগ।
কুমিল্লার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবা গ্রহীতাদের মারধরের ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন উপপরিচালক মোঃ নুরুল হুদা। পরে জেলা থেকে সিনিয়র সাংবাদিকরা পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বিষটি নিয়ে কথা বলার ৩ ঘন্টা পর কেড়ে নেয়া মোবাইল ফোন ফেরত দেয়া হয়।
জানা যায়, কুমিল্লা রিপোর্টাস ইউনিনিটির সদস্য দূর্নীতির সন্ধানের জেলা প্রতিনিধি রকিবুল ইসলাম রানা তাঁর ব্যাক্তিগত পাসপোর্ট আনার জন্য রোববার বেলা ১১ টায় কুমিল্লা পাসপোর্ট অফিসে যায়। তার সাথে বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার প্রতিনিধি মোঃ সাফিও ছিলেন।
রানা টোকেন সংগ্রহ করে পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছিলো।
এসময় ভিতরে গন্ডগোল দেখে দুজন এগিয়ে যায়। তাঁরা দেখতে পায় পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) নুরুল হুদা চেয়ার দিয়ে কয়েকজন পাসপোর্ট সেবা গ্রহীতাকে মারধর করছে। এসময় কুমিল্লা নিউজ পোর্টাল এর সংবাদকর্মী সাফি তাঁর মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও ফুটেজ নেয়ার সময় উপপরিচালক নুরুল হুদা এগিয়ে এসে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে সাংবাদিকদের।
খবর পেয়ে কুমিল্লা থেকে সহকর্মী ও সিনিয়র সাংবাদিকরা পাসপোর্ট অফিসে যায়। ঘটনার বিষয়ে উপ পরিচালকরে সাথে কথা বলে।
মোবাইল ছিনতাইয়ের বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে কুমিল্লা কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) কলম কান্তি দাসসহ পুলিশের একটিদল উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্ঠা করেন। ৩ ঘন্টা পর পুলিশের মধ্যস্থতায় ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল ফোনটি ফেরত দেয়া হয়।
এ বিষয়ে ভূক্তভূগী সাংবাদিক রানা জানায়, মারধরের ভিডিও ধারন করার কারনে ডিডিও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এঘটনায় কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ পাশাপাশি পাসপোর্ট অফিসের ডিডি সহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোষ্ট করতে দেখা গেছে।
জানা যায়, দালালের ‘চেইনে’ গেলেই বাড়তি টাকায় সময়মতো মিলছে পাসপোর্ট। আর দালালের মাধ্যম ছাড়া আবেদন করলে ১৫ দিনের পাসপোর্ট হাতে আসছে না ছয় মাসেও। এতে কারও কারও বিদেশযাত্রা বাতিলের ঘটনাও ঘটছে। সেবা প্রত্যাশীরা ভোগান্তির অভিযোগ নিয়ে উপ-পরিচালকের কাছে গেলে সেখানেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অসাধু কর্মকর্তারাই দালালদের লালন পালন করে থাকেন। সেজন্যই বারবার অভিযান দেয়ার পরেও দালালদের দৌরাত্ম্য কমছে না পাসপোর্ট অফিসে। অফিস কর্মকর্তা ও দালাল সিন্ডিকেটের যোগসাজশের কারনে এই অফিস পাসপোর্ট অফিসে দালালদের কাছে পুরোপুরি ‘জিম্মি’ হয়ে পড়েছে গ্রহীতারা।
মারধরের শিকার পাসপোর্ট গ্রহিতা মোঃ সাকিব জানান, তিনি হোমনা থেকে সকালে পাসপোর্টের জন্য আসেন। ৪ ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে পায়ে ব্যাথা অনুভব হওয়ায় তিনি সহ ৩/৪ জন একটি টেবিলে বসে। এসময় ডিডি নূরুল হুদা কোন কিছু না বলেই চাড় থাপ্পড় দিতে থাকে এক পর্যায়ে চেয়ার দিয়ে এলোপাথারি মারধর শুরু করে দুই যুবককে।
এ বিষয়ে উপ-পরিদর্শক মোঃ নূরুল হুদা বলেন, অনুমতি না নিয়ে ভিডিও ধারণ করায় মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে মোবাইল ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।